ধর্ষণের বিচারিক কার্যক্রম ও শাস্তি দ্রুততম সময়ে কার্যকর না হলে নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে বলে মন্তব্য করেছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। সংগঠনটির নেতারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশব্যাপী নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ এবং ধর্ষণের সর্বোচ্চ বিচার ফাঁসি কার্যকর করার জোর দাবি জানান। অন্যথায় সারা দেশের ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

রোববার (৯ জুলাই) রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মোহাম্মদ আলাউদ্দিন।

নেতারা বলেন, জুলাই আন্দোলনের অন্যতম স্পিরিট ছিল নারী। অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা প্রশ্নে সরকারের আপসহীন ভূমিকা ছাত্রসমাজের প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক বাংলাদেশে নারীর শ্লীলতাহানি, ইভটিজিংসহ ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধ স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক বাংলাদেশ যেন নারীর জন্য নরকে পরিণত হয়েছে। আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করছি বিচারহীনতার সংস্কৃতিই নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী। এর দায় সরকারকেই নিতে হবে। দেশব্যাপী ধর্ষণের মতো ভয়াবহ অপরাধের বিচারিক কার্যক্রম বিলম্ব ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে আগামীতে নারীদের নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।

তারা বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিককালে অনেকগুলো ধর্ষণ-অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ায় ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। আমরা ভেবেছিলাম ধর্ষকদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার অন্তত কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করবে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার কার্যকর ও শাস্তি নিশ্চিত হবে। গতকাল (শনিবার) ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত মানববন্ধন থেকে আমরা আসিয়া ধর্ষণকাণ্ডের সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে রায় দেওয়ার দাবি করেছিলাম। কিন্তু আজ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে আলোচিত আসিয়া ধর্ষণকাণ্ডে বিচারিক কার্যক্রম ছয় মাস সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং নারীর নিরাপত্তার সঙ্গে চরম ধৃষ্টতার শামিল। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নারীর প্রতি সহিংসতা আরও বৃদ্ধি করবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। অথচ ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট ফ্যাসিবাদ পরবর্তী সময়ে মানুষের ভাগ্যাকাশে ন্যায়ের ঝান্ডা ওড়াবে বলে আমরা আশাবাদী ছিলাম। আইন উপদেষ্টার ভাবলেশহীন, দায়িত্বহীন আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে নেতারা বলেন, গত দেড় মাসে অন্তত ২০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, একটিরও বিচার হয়নি। এমনকি গ্রামের পঞ্চায়েত কর্তৃক ধামাচাপা দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। অথচ নারীর নিরাপত্তায় সরকার কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেউই এগিয়ে আসছে না। গতকালও (শনিবার) গাজীপুরে ও নরসিংদীতে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে সংবাদমাধ্যম বরাতে জানা যায়। এখানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ব্যর্থতা স্পষ্ট। জননিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ উপদেষ্টা নারীর ইজ্জত ও সম্মান রক্ষায়ও ব্যর্থ হওয়ায় অনতিবিলম্বে তার পদত্যাগ করা উচিত।

কেএইচ/এসএসএইচ