কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হওয়ার কারণে স্নাতকোত্তরের ভর্তি ফি কমানোর দাবি করছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ১৩ জুন থেকে পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা আসার পরই এমন দাবি উঠছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে।

স্নাতকোত্তর প্রথম সেমিস্টার চূড়ান্ত পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে গিয়ে ভর্তি ফি পরিশোধ করতে হবে তাদের। অনুষদ এবং বিভাগভেদে ৭ হাজার ১০০ থেকে শুরু করে ৯ হাজার ৯০০ টাকা পর্যন্ত স্নাতকোত্তরে ভর্তি ফি নেয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা সন্তান। এসব পরিবারের অধিকাংশের পক্ষেই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সন্তানের খরচ বহন করা দুঃসাধ্য। ফলে শিক্ষার্থীরা টিউশন করেই নিজের খরচ বহন করেন। আবার কেউ কেউ পরিবারের জন্যও টাকা পাঠান। তবে প্রায় দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী রাসেল নূর বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের একমাত্র আয়ের পথ টিউশন দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় এ সময়ে প্রায় ১০ হাজার টাকা ভর্তি ফি বহন করা সবার জন্যই কষ্টসাধ্য। মানবিক দিক বিবেচনা করেই অন্তত ৫০ শতাশ ভর্তি ফি কমানো উচিত প্রশাসনের।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক লোকপ্রশাসন বিভাগের একজন শিক্ষার্থী বলেন, করোনায় পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় গ্রামে কৃষিকাজ করে পরিবারকে সাপোর্ট দিয়েছি। ঈদের পর কুমিল্লায় এসে এখনো কোনো টিউশন জোগাড় করতে পারিনি। স্নাতকোত্তরের ভর্তি ফি জমা দিতে অনিবার্যভাবেই আমাকে ঋণের মুখোমুখি হতে হবে।

ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী রাইহান বলেন, অনলাইন ক্লাসের জন্য যাবতীয় ডিভাইস ও নিয়মিত ইন্টারনেট ডাটাপ্যাক কিনতে গিয়ে যথেষ্ট বেগ পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের। তাছাড়া করোনা মোকাবিলায় প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীর পরিবারই অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এখন শুধু প্রশাসনের পক্ষেই সম্ভব ভর্তি ফি কমিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ লাঘব করা।

ভর্তি ফি কমানোর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভেবে দেখবে। তবে এখনই এ ব্যাপারে কোনো কিছু বলা যাবে না।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিক্ষার্থীরা আবেদন করলে আমরা বিষয়টি সিন্ডিকেটে আলোচনা করব। সিন্ডিকেটই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

এমএসআর