ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার, ডাকসুর রোডম্যাপ ও নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতসহ ৭ দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির ঢাবি শাখা। 

মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে তারা। একই সময়ে জামায়াত নেতা এটিএম আজহার মৃত্যুদণ্ড মামলা থেকে খালাসের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাম সংগঠনগুলোর জোট গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট। 

বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর বিক্ষোভ মিছিল আজ ৪টায় হওয়ার কথা থাকলেও বিলম্ব করে প্রথমে সাড়ে ৪টা, তারপর ৫টায় শুরু করার কথা জানান। পরবর্তীতে ৫টার পরে তারা মধুর ক্যান্টিনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে।

বিক্ষোভ মিছিলে তারা ‘তুমি কে আমি কে একাত্তর একাত্তর’, ‘তুমি কে আমি কে চব্বিশ চব্বিশ’, ‘একাত্তরের এর বাংলায়, রাজাকারের ঠাঁই নাই’, ‘আমার সোনার বাংলায়, আলবদরের ঠাঁই নাই’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘আওয়ামী লীগ আর রাজাকার এই বাংলার গাদ্দার’, ‘মুক্তিযুদ্ধ হারেনি, হেরে গেছে হাসিনা’, চব্বিশ হারেনি, হেরে গেছে ফ্যাসিবাদ’সহ নানা স্লোগান দেন।

অপরদিকে সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি ছাত্রশিবির সভাপতি এস এম ফরহাদ লিখিত বক্তব্যে ৭টি দাবি উত্থাপন করেন। 

এর মধ্যে মৌলিক ৩ দফা দাবি হচ্ছে- অবিলম্বে ডাকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত কার্যকর ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং ক্যাম্পাসে পূর্বের ন্যায় যান চলাচল ও বহিরাগত প্রবেশ সীমিত করা এবং অবিলম্বে সাম্য হত্যার বিচার নিশ্চিতকরণে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা।

নিরাপদ ক্যাম্পাস বিনির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি উপস্থাপিত অন্য ৪টি দাবিগুলো হচ্ছে-  ক্যাম্পাস এলাকায় ভবঘুরে, অপ্রকৃতিস্থদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা, পুরো ক্যাম্পাস এলাকা ও ক্যাম্পাসের প্রবেশপথগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা, ক্যাম্পাসের পাঁচটি প্রবেশপথে যে সিকিউরিটি অ্যান্ড সার্ভেলেন্স বক্স রয়েছে সেগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কার করে সেখানে নিরাপত্তা প্রহরীর ব্যবস্থা করা এবং প্রয়োজন সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল মোবাইল টিমের সদস্য সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিয়মিত টহল পরিচালনা করা।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের জেনারেল সেক্রেটারি মহিউদ্দিন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আশিক, দাওয়াহ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল হোসেন মারুফ প্রমুখ।

বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার এটিএম আজহারকে আলবদর কমান্ডার দাবি করে বলেন, আজ গণঅভ্যুত্থানের ১০ মাসে পরে দেখতে পেলাম একাত্তরের গণহত্যার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আলবদর কমান্ডার আজাহার বেকসুর খালাস হলেন। যার মাধ্যমে রক্তের ওপর দাঁড়ানো এই সরকার আমাদের সঙ্গে বেইমানি করেছে। 

তিনি দাবি করেন, এই সরকারের আমলে একের পর এক মব জাস্টিস, সন্ত্রাস মুক্তি ও একাত্তরের গণহত্যাকরীদেরও মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। একাত্তরে যারা দালালি করেছে বাংলাদেশের সঙ্গে বিরোধিতা করেছে তাদের এ দেশে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, একজন মানবতাবিরোধী ও গণহত্যাকারীর সঙ্গে আপস করা যাবে না, যদি করেন তাহলে আপনার অবস্থা পতিত হাসিনার মতো হবে।

এসএআর/এমএন