সাদিক কায়েম
বাংলাদেশে খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের রাজনীতি করার অধিকার নেই
ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম বলেছেন, বাংলাদেশে খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। তাদের যেখানেই পাওয়া যাবে ধরে থানায় দিতে হবে এবং বিচারের আওতায় আনতে হবে। জার্মানিতে যেভাবে নাৎসি বাহিনীকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, ইতালিতে যেভাবে মুসোলিনিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, একইভাবে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, হাসিনা ও তার দোসরদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।
আজ (শনিবার) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিবুর রহমান হল অডিটোরিয়ামে ‘আয়না ঘরের সাক্ষী, গুম জীবনের আট বছর’ নামে একটি গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
সাদিক কায়েম বলেন, বাংলাদেশে রাজনীতি করবে বাংলাদেশপন্থি যারা আছে তারাই। এর বাইরে যারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে, গুম খুন করেছে তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। একই সাথে গুম, খুন, গণহত্যা, শিশুহত্যার সাথে জড়িত সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের যারা ছিল সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। সকল কিলার জেনারেলদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এরাই গত ষোল বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে এসব কাজে সহযোগিতা করেছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী অনেক আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে। এই ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদেরকে বিভিন্ন ফ্রেমিং করে গুম করা হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা গুমের শিকার আরমান ভাইসহ অনেককে ফিরে পেয়েছি। কিন্তু অনেকেরই খবর এখনও পাইনি।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, আজ গুমের ঘটনার ওপর অনেকে ডকুমেন্টারি তৈরি করছে। কিন্তু আমরা দেখছি খুনি হাসিনা ও তার দোসররা এটাকে সাজানো নাটক বলছে। যে খুনি হাসিনা গত ষোল বছরে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে, জুলাই অভ্যুত্থানের দুই হাজার ভাই-বোনকে শহীদ করেছে, চল্লিশ হাজার ভাই-বোনকে পঙ্গু করেছে, এখন পর্যন্ত সেই খুনি হাসিনার কোনো অনুশোচনা নেই।
অনুষ্ঠানে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের ৩৬ দিন বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছে। ফ্যাসিবাদীদের অবসান হয়েছে। বাংলাদেশ আজ নতুন অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অপরাধীদের বিচারের চেষ্টা চলছে। বিচার প্রক্রিয়া শুরুও হয়েছে। অন্যায়ের অবসান ঘটবে। জুলাই সনদের ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুন বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এই সংগ্ৰাম চলতেই থাকবে।
সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ পরাজিত হলেও বার বার ফিরে আসার চেষ্টা করে। আমরা যেন সবাই একত্রিত হয়ে দল মত নির্বিশেষে ফ্যাসিবাদ প্রতিহত করার কাজ জারি রাখতে পারি।
‘মায়ের ডাক’-এর সংগঠক সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, এই বইয়ের প্রতিটি লাইনে যে কথা আছে এটাকে আমরা বুকে ধারণ করি। শুধুমাত্র ভিন্ন মতের জন্য আওয়ামী ফ্যাসিস্টের সময় অনেককে গুম করে নেওয়া হয়েছে। কাউকে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা শুধু তাদের তুলে নেওয়ার কাহিনী জানি কিন্তু তাদের গুম করে কিভাবে অত্যাচার করা হয়েছে তার সুষ্ঠু প্রমাণ এই আয়না ঘরের সাক্ষী বইটি।"
তিনি বলেন, প্রত্যেকটি গুমের ঘটনার বিচার করতে হবে। আমরা বিশ্ববাসীকে জানাতে চাই কেবলমাত্র মতের পার্থক্য থাকার জন্য তাদের সাথে কী ধরনের অত্যাচার করা হয়েছে। আমরা একসাথে থাকলে এই বিচার নিশ্চিত করতে পারবো।
আরও পড়ুন
গুমের শিকার হওয়া ব্যারিস্টার মীর আহমাদ বিন কাসেম আরমান বলেন, আমাদের হতাশ হলে চলবে না। আমি এখনও আশা দেখি এমন এক বাংলাদেশের যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। সবাই এক হয়ে বাংলাদেশেকে বিনির্মাণ করব। এমন দেশ গঠন করতে হবে যেখানে সংবিধান অনুযায়ী বিচার করা হয়। সবাই সাথে থাকলে স্বপ্নের বাংলাদেশ গঠন করতে পারব।
এসএআর/এনএফ