সিটি ইউনিভার্সিটিতে সংবাদ সম্মেলন
ক্ষতিপূরণ ও জড়িতদের ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি শিক্ষার্থীদের
সাভারে সিটি ইউনিভার্সিটিতে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিরে শিক্ষার্থীদের হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ এনে প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে সাভারের বিরুলিয়ার ইউনিয়নের খাগান এলাকায় সিটি ইউনিভার্সিটির নিজস্ব ক্যাম্পাসে এই সংবাদ সম্মেলন করেন সিটি ইউনিভার্সিটির সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বিজ্ঞাপন
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে ইংরেজি বিভাগের ৬১ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম তানজিল বলেন, ২৮ অক্টোবর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়ে আমরা আলোচনা করছিলাম। হঠাৎ করে ড্যাফোডিলের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী আমাদের ক্যাম্পাসে হামলা চালায়। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমাদের ক্যাম্পাসের গেট ভাঙচুর করার স্পষ্ট ভিডিও রয়েছে। তারা আমাদের প্রশাসনিক বিভাগ, ভিসি ও প্রো-ভিসি স্যারের রুমগুলোও ভাঙচুর করেছে। পরে তারা লুটপাটও চালায়। এ সময় তাদের প্রশাসনিক বিভাগের ভেতর থেকে আটক করা হয়। তারা ক্যাম্পাসের বাসগুলোতে অগ্নিসংযোগ করে। তারা ড্রেন নিয়ে পর্যবেক্ষণ করে হালমাগুলো চালিয়েছে, তার পর্যাপ্ত প্রমাণ হিসেবে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।
তিনি বলেন, এতোগুলো স্টুডেন্টকে সাইলেন্ট বাজিয়ে কোনো লেলিয়ে দেওয়া হলো। সাইলেন্টগুলো কখন বাজানো হয়? ইমার্জেন্সি অবস্থায় সাইলেন্ট বাজানো হয়। তা হলে আমাদের ক্যাম্পাসে হামলা কি কোনো ইমার্জেন্সি অবস্থা ছিল? একটি ইমার্জেন্সি অবস্থায় সাইলেন্টগুলো বাজানোর কথা এবং দুই আড়াই হাজার শিক্ষার্থীকে তারা কেনো আটকালেন না। দুই আড়াই হাজার শিক্ষার্থী আসতেছে কোনো বিভাগের কেউ আসলো না কোনো ফ্যাকাল্টি আসলো না। আমরা পুলিশের সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা বলেছি। পুলিশ আমাদেরকে জানিয়েছে, তারা নাকি এখানে আছে। পরে আমরা সেনাবাহিনীকে ফোন দিয়েছি। তারা আমাদেরকে জানিয়েছে, তাদের এরিয়ার মধ্যে পড়ে না।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, আমাদের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী হাসপাতালে রয়েছে। তার মধ্যে দুইজন শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমি সরকার ব্যবস্থার কাছে এবং সবার কাছে একটা দাবি চাইবো—এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠ বিচার হোক।
সংবাদ সংসম্মেলনে ৬১ ব্যাচের শিক্ষার্থী আফিয়া বলেন, ড্যাফোডিলের কর্তৃপক্ষ বলেছে, হামলাকারীদের আটক করা আমাদের উচিত হয়নি। কিন্তু আমরা অনেক ব্যথিত, কারণ আমাদের সম্ভ্রম রক্ষ করতে আমাদের ভাইয়েরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের রক্ষা করলো। তারা এখন হাসপাতালে রয়েছে। আমি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ হতে জানাতে চাচ্ছি যে, আমাদের দাবিগুলো পূরণ করা হোক, ড্যাফোডিলের কর্তৃপক্ষ তাদের ভুল শিকার করুক, আমাদের দাবি পূরণে সবাই আপনারা সহযোগিতা করুন।
সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন ইংরেজি বিভাগের ৬০ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাঈম ইসলাম। তিনি বলেন, ড্যাফোডিল ইন্টান্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে কর্তৃপক্ষকে অগ্নি সন্ত্রাস ও লুটপাট এবং মিথ্যাচারের দায় শিকার করে নিঃস্বার্থ ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। হামলায় আহত সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সমস্ত ব্যয় ও ভাঙচুরের ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো ও পরিবহনের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যেসব ড্যাফোডিল শিক্ষার্থী এই ধ্বংসযজ্ঞে সরাসরি জড়িত এবং যারা বিভিন্ন মাধ্যমে ছাত্রদের উসকে দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠ তদন্ত করে ছাত্রত্ব বাতিল ও আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি বলেন, হামলার রাতে বার বার সহযোগিতা চাওয়ার পরও আইনশৃঙ্খলারক্ষকারী বাহিনীর সহায়তা না পাওয়ার কারণে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে এবং দায়িত্ব অবহেলাকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। উক্ত ঘটনার প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অ্যাসোসিয়েশনের (এপিইউবি) সভাপতি সবুর খানের নিরবতা তার পক্ষপাতদুষ্টতাকে প্রমাণ করে। আমরা তার পদ অপসারণ চাই। আমরা দ্রুত সময়ে ক্লাসে ফিরে যেতে চাই, এক্ষেত্রে আমাদের দাবিসমূহ পূরণ করে উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম একসঙ্গে শুরু করতে চাই।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে সিটি ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
লোটন আচার্য্য/এএমকে