স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ ঘোষণাসহ ৪ দফা দাবিতে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।

সোমবার (২১ জুন) দুপুরে এ দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্র ইউনিয়নের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে একটি মিছিল শহীদ মিনার, হাইকোর্ট মোড়, প্রেসক্লাব মোড় ঘুরে সচিবালয়ের সামনে আসলে পুলিশ বাঁধা দেয়। পরে ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মো. ফয়েজ উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল এবং সদস্য এবি তাহসিন স্মারকলিপি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করেন। শিক্ষামন্ত্রী মন্ত্রণালয়ে না থাকার তার হয়ে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন শিক্ষামন্ত্রীর একান্ত সচিব ড. আব্দুল আলীম খান।

ছাত্র ইউনিয়নের দাবিগুলো হলো : নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে করোনা টিকা নিশ্চিত করা ও রোডম্যাপ ঘোষণা করে অবিলম্বে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, শিক্ষা সংকট মোকাবিলায় শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা, সব শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া এবং করোনাকালে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেতন ও অন্যান্য ফি মওকুফ করা।

এর আগে দুপুরে এসব দাবিতে সমাবেশ করে সংগঠনটি। এ সময় বৃষ্টি নামলে বৃষ্টিতেই সমাবেশ করেন তারা। কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. ফয়েজ উল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক দীপক শীলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর সংসদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় সংসদের কোষাধ্যক্ষ শামীম হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সংসদের দফতর সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজা, ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল ইসলাম শিশির, সদস্য জিকে সাদিক এবং মানিকগঞ্জ জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাসেল আহম্মেদ।

সভাপতির বক্তব্যে মো. ফয়েজ উল্লাহ বলেন, গত প্রায় ১৬ মাস ধরে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কিন্তু এই ১৬ মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো ধরনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে পারেনি। ১৬ মাসে প্রায় ১৫২ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। এর দায় শিক্ষামন্ত্রীর। এ শিক্ষামন্ত্রী ব্যর্থ। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ ঘোষণা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, করোনাকালে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেতন ফি মওকুফ করতে হবে। শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকা দিতে হবে এবং ভ্যাক্সিনেশনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থীরা যেন ঝরে না পড়ে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ব্যয় এবং শিক্ষকদের বেতনের দায়ভার সরকারকে বহন করতে হবে।

সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল বলেন, করোনার থাকা না থাকার প্রশ্ন শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করছে এ সরকার। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ফলে শতাধিক শিক্ষার্থী আত্মহত্যার ঘটনাসহ নানান সংকট তৈরি হয়েছে। এই সংকট দীর্ঘ হতে আমরা ছাত্র ইউনিয়ন আর দেব না। প্রয়োজনে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় দখল করব। বৃষ্টিতে ভিজে প্রোগ্রাম যেহেতু করতে পেরেছি, তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও দখল করতে পারব। মন্ত্রণালয় দখল করতে আমাদের এই ২০-২৫ জনই যথেষ্ট, যার প্রমাণ আমাদের আজকের এই প্রোগ্রাম।

শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী বারবার শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিচ্ছেন, বারবার তারিখ ঘোষণা দিয়ে তামাশা করছেন অথচ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন না। আমরা বলতে চাই, আপনার মতো শিক্ষামন্ত্রীকে আর একটি মুহূর্তের জন্যও দেখতে চাই না। আপনি পদত্যাগ করুন।

এইচআর/এসকেডি