টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) বেশ কয়েকটি পদে শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকরা নিজ নিজ পদে যোগদান করার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও তাদের যোগদানপত্র দেওয়া হয়নি। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও রেজিস্ট্রার একদিনের মধ্যেই তাদের পছন্দমত গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদে শিক্ষকদের নিয়োগ দিয়ে যোগদানপত্র দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, চলতি বছরের গত ১ জুলাই অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ পর্ষদ রিজেন্ট বোর্ড থেকে গ্রন্থাগারিক পদে প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ খাদেমুল ইসলাম, প্রক্টর পদে প্রফেসর ড. মীর মো. মোজাম্মেল হক ও শরীরচর্চা শিক্ষা বিভাগের পরিচালক পদে সহযোগী অধ্যাপক ধনেশ্বর চন্দ্র সরকারকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপরই ওই তিন শিক্ষক ২ জুলাই নিজ নিজ পদে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। কিন্তু যোগদানের দুই মাস পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যোগদানপত্র পাননি।

যোগদানপত্র না পাওয়া শিক্ষকরা জানান, গত ২৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পরিচালক পদে সহযোগী অধ্যাপক পদে খান মো. মূর্তজা রেজা লিংকন ও গবেষণা সেলের পরিচালক পদে সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল করিমকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা মাভাবিপ্রবির উপাচার্য (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও রেজিস্ট্রারের পছন্দের শিক্ষক হওয়ায় নিয়োগের দিনই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের যোগদানপত্র দেওয়া হয়। এছাড়াও প্রক্টর পদে থাকা প্রফেসর ড. মীর মো. মোজাম্মেল হকের সুপারিশে তিনজন শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং গ্রন্থাগারিক পদে থাকা প্রফেসর ড. মোহাম্মদ খাদেমুল ইসলামের সুপারিশে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সেকশন অফিসার আতিকুর রহমান খানকে মাস্টার্স করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গত ১৩ জুলাই অনুষ্ঠিত রিজেন্ট বোর্ডের সভায় এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক পদে আপগ্রেডেড পাওয়া ড. রোকসানা হক রিমি ও গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদে আপগ্রেডেড পাওয়া ড. মো. মিজানুর রহমানকেও নিয়োগপত্র দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

মাভাবিপ্রবির বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ খাদেমুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিয়োগ হওয়ার পরই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগদান করেছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো যোগদানপত্র দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে একাধিকবার বলা হয়েছে। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না। তবে তাদের পছন্দের শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়ার দিনই যোগদানপত্র দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। যেকোন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনাকাঙিক্ষত ঘটনা ঘটার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে।

যোগদানপত্র না পাওয়া প্রক্টর প্রফেসর ড. মীর মো. মোজাম্মেল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, সব প্রক্রিয়া শেষে নিয়োগ পেয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো যোগদানপত্রের চিঠি পাইনি। এ বিষয়ে উপাচার্যকে জানানো হলেও তিনি দেই দিচ্ছি বলে সময় ক্ষেপণ করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মোহা. তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. এ আর এম সোলাইমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটা প্রশাসনিক বিষয়। এই বিষয় নিয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।

অভিজিৎ ঘোষ/আরএআর