জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন ক্যাম্পাসের প্রকল্পের তিন দফায় মেয়াদ বাড়লেও এখন পর্যন্ত মাস্টারপ্ল্যান চূড়ান্ত হয়নি। নানা জটিলতা ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তিন বছরেও মাস্টারপ্ল্যানের জন্য কোম্পানি নিয়োগ দেওয়া যায়নি। এ অবস্থায় মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাস্টারপ্ল্যান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেবেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ড. ইমদাদুল হক।

জানা যায়, ২০১৯ সালে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন : ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের জন্য ২৯ কোটি ৫৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরবানাকে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করে।

গত ১১ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০২০-২১ আর্থিক বার্ষিক কর্মসূচির সভায় নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগ ও মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের জন্য ক্রয় প্রক্রিয়া পিপিআর অনুযায়ী না হওয়ায় বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়নি। পরে মাস্টারপ্ল্যানের কাজের জন্য সিঙ্গেল চয়েজের ভিত্তিতে আরবানা কোম্পানিকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকায় কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নিয়মানুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ একর জমির মাস্টারপ্ল্যানের জন্য কমপক্ষে ১০০ একর জমিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কিন্তু এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটায় এ সিদ্ধান্তও বাতিল করা হয়।

২০১৯ সালে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ মাস্টারপ্ল্যানের চিত্র উপস্থাপন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ মাস্টারপ্ল্যানের চিত্র বিভিন্ন জায়গায় প্রদর্শনও করে। গত ৩ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে যোগদানের পর অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক মাস্টারপ্ল্যানের জন্য কোম্পানি নিয়োগে জটিলতা ও অনিয়মের কারণে পুরো প্রক্রিয়া বাতিল করেন। গত ২৩ আগস্ট মাস্টারপ্ল্যানের জন্য পুনঃদরপত্র আহ্বানের নির্দেশ দেন উপাচার্য ড. ইমদাদুল হক। কিন্তু ফের পুনঃবিজ্ঞপ্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাহায্যে মাস্টারপ্ল্যান চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসবের মধ্যেই ২০১৮ থেকে প্রকল্পের মেয়াদ তিন দফায় বাড়ানো হয়। মাস্টারপ্ল্যান না হওয়ায় এ প্রকল্পের লেক নির্মাণের টেন্ডারও বাতিল হয়েছে। আটকে আছে পুরো কাজ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী সাহাদাত হোসেন বলেন, মাস্টারপ্ল্যানের কাজ টেন্ডারের মাধ্যমে হলে নতুন ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত করা যাবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য মাস্টারপ্ল্যান প্রক্রিয়াটির কাজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে করার জন্য আমাদের মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কাজটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে যাবে। এভাবে কাজটি করলে অনেক দীর্ঘায়িত হবে।

এমটি/এসএসএইচ