শারদীয় দুর্গোৎসবের সময় সারাদেশে সংখ্যালঘু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ‘শৈল্পিক’ প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের উদ্যোগে ‘দেখতে কি পাও, পুড়ছে বাংলা...’ শীর্ষক একটি শৈল্পিক প্রতিবাদী নাট্য পরিবেশনা উপস্থাপন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

‘গোল হয়ে আসুন সকলে, ঘন হয়ে আসুন সকলে’- এ প্রতিপাদ্য ধারণ করে অনুষ্ঠিত শৈল্পিক প্রতিবাদ সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারীসহ শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

পরিবেশনাটির মুখ্য তত্ত্বাবধায়ক তানভির নাহিদ খান বলেন, সব ধর্ম, বর্ণের মানুষের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণে মহান মুক্তিযুদ্ধে মরণপণ লড়াই করে এ রাষ্ট্রের স্বাধীনতা অর্জিত হয়। তবে সম্প্রতি দুর্গোৎসবে সারাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনা এ বাংলার হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনকে হুমকির মুখে ফেলে অসাম্প্রদায়িক এ রাষ্ট্রকে সংকটাপন্ন করেছে। সমাজের একজন সচেতন মানুষ হিসেবে এ সাম্প্রদায়িক আচরণের প্রতিবাদ করা নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে হয়েছে।

বিভাগের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান লিয়ন বলেন, আমাদের দেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। সব ধর্ম, সব জাতি সম-অধিকার মুক্তিযুদ্ধের এ মূল প্রতিপাদ্য নিয়ে আমরা বসবাস করি। যখন এর ব্যত্যয় ঘটে তখন রচিত হয় অন্যায়। এটা নিজ মাতৃভূমি তথা আপনজনের সঙ্গে অন্যায়। আমাদের বিভাগ সবসময় নাট্য এবং শিল্পের ভাষায় প্রতিবাদ করে। মানুষ হিসেবে, সচেতন নাগরিক হিসেবে এবং সর্বোপরি শিল্পী হিসেবে দেশ ও মানবতার স্বার্থে আমাদের বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সবসময়ে সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে সক্রিয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক ভূঁইয়া শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ না থাকার কারণে দেশে বিভিন্ন অন্যায় হচ্ছে। আমরা আশা করব প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক চর্চা চলবে এবং এর মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যাব। এমন প্রাণবন্ত প্রতিবাদী পরিবেশনার জন্য তোমাদের ধন্যবাদ জানাই।

ঢাবির থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ২০১৬ সালে নাসিরনগরে হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের ওপর সাম্প্রদায়িক আক্রমণ, লুট ও তাণ্ডবের বিরুদ্ধে ‘আমি মালাউন বলছি’ শীর্ষক প্রতিবাদী পরিবেশনা উপস্থাপন করেছিলেন।

এইচআর/এসএসএইচ