ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নুরুল হক নুর।

আজ (রোববার) ডাকসু প্রসঙ্গে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে এ আহ্বান জানান ডাকসুর সাবেক এই ভিপি ও নবগঠিত রাজনৈতিক দল গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুর।

তিনি বলেন, আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের অনুষ্ঠান জাঁকজমকভাবে পালন করার জন্য নানান অনুষ্ঠানমালা সাজানো হয়েছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অবিচ্ছেদ্য অংশ ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা নেই। যে ডাকসু নেতৃবৃন্দের ভূমিকার ফলে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষে ডাকসু থাকবে না, এটা হতে পারে না। শতবর্ষ উদযাপনে ডাকসু না থাকাটা বড় একটি অপূর্ণতা বলে আমি মনে করছি।

ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত ডাকসু নির্বাচনের আয়োজন করে তারপর শতবর্ষের অনুষ্ঠানগুলোর আয়োজন করা। এ বিষয়ে আমরা সাবেক ভিপি-জিএস যারা আছেন, তাদের সাথে আমি কথা বলবো এবং সবাইকে নিয়ে একটা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই বক্তব্যটি আরও স্পষ্ট করবো যে ডাকসু ছাড়া কখনোই এই অনুষ্ঠান কার্যকর হতে পারে না। ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনের পর করোনার কারণে থমকে গেলেও এখন থেকে আবার নিয়মিত ডাকসুর দাবি জানাবো আমরা।

ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের জন্য সর্বমহলের সহযোগিতা প্রয়োজন- উপাচার্যের এমন মন্তব্যের বিষয়ে নুর বলেন, উনারা সবসময় সুশীল টাইপের একটা বক্তব্য দেন। নিরপেক্ষ থাকার ভাব ধরেন, বস্তুত উনারা নিরপেক্ষ নন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক। তারা যদি নির্বাচন দিতে চায়, বাধা দেবে কে? সমস্যা হচ্ছে তাদের যারা বসিয়েছে, তাদের অনেক আদেশ-নিষেধ মানতে হয়।

সরকার চায় না ডাকসু নির্বাচন হোক উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেহেতু দেশে গণতান্ত্রিক চর্চাটা নেই, নির্বাচন প্রক্রিয়া সেটা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। যে কারণে সরকার চায় না যে, ডাকসু নির্বাচন হোক। ২৮ বছর পর যে নির্বাচনটা হয়েছে সেটাও আন্দোলন-সংগ্রাম ও নানান প্রেক্ষাপটে হয়েছিল। এই প্রশাসনেই কিন্তু সে নির্বাচন আয়োজন করেছিল। বর্তমান প্রশাসন যদি চায় তাহলে গত নির্বাচনের ত্রুটি কাটিয়ে সুন্দর নির্বাচন আয়োজন করতে পারে। কিন্তু তারা সেটা না করে বিভিন্ন সুশীল বক্তব্য দিচ্ছেন, সেটা খুবই দুঃখজনক।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ দীর্ঘ ২৮ বছরের অচলায়তন ভেঙে ২০১৯ সালের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ওই নির্বাচনে ছাত্রলীগ থেকে ২৩ জন প্রতিনিধি এবং সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে দুইজন প্রতিনিধি নির্বাচিত হোন।

এইচআর/এনএফ