স্নাতক পর্যায়ে ২০১৮ সালে আটজন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। সময়ের ব্যবধানে মাত্র একজন ছাড়া টিকতে পারেননি কেউ। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে স্নাতক পর্যায়ে এ পর্যন্ত ৩৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও এরই মধ্যে ঝরে পড়েছে ১৫ জনের বেশি। এর পেছনে বাংলায় পাঠদান, ভাষাগত দক্ষতা যাচাই, কোর্স না করানো, আন্তর্জাতিক মানের পাঠ্যক্রমের অনুপস্থিতি, বই-নোটসহ বেশিরভাগ শিক্ষা উপকরণ বাংলায় থাকার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকদের অসহযোগিতাকে দায়ী করছেন তারা।

কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক র‍্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে লিঙ্গ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাতের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর অনুপাতও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তালিকা, সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সভাপতির দেওয়া তথ্য আর ডরমিটরিতে অবস্থানরতদের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২৫ জন নেপালের, ৭ জন সোমালিয়ার এবং দুইজন জর্দানের শিক্ষার্থী মিলিয়ে মোট ৩৪ জন বিদেশি শিক্ষার্থী স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছে ৪৩ জন। মাস্টার্স পর্যায়ে ঝরে পড়ার সংখ্যা কিছুটা কম।

সর্বপ্রথম ২০১৪-১৫ সেশনে মাত্র দুইজন নেপালি শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে বিদেশি শিক্ষার্থীর আগমন শুরু হয়। এর আগে কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন এমন তথ্য নেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে।

পরের বছর অর্থাৎ ২০১৫-১৬ সেশনে সে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় তিনজনে। এরপর ২০১৭ সালে জর্দান, সোমালিয়া ও নেপাল থেকে দশজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। পরের বছর নেপালি ও জর্দান থেকে আটজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। কিন্তু মাত্র একজন নেপালি শিক্ষার্থী ছাড়া বাকি সাতজনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে ২০১৯ সালের ৯ জানুয়ারি একসঙ্গে পাঁচজন নেপালি শিক্ষার্থী গোপনে দেশ ছাড়ার ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হয়ে বছর না পেরুতেই চলে যান জর্দানের শিক্ষার্থী রাদ ইব্রাহিম খলিল আবুশায়ুন।

এদিকে ২০১৮ সালে চার সোমালি আর তিন নেপালি শিক্ষার্থী পায় রাবি। তবে এরই মধ্যে সেখান থেকে চলে গেছেন এক সোমালি শিক্ষার্থী। অধ্যায়নরতদের মধ্যে প্রথম বর্ষে অকৃতকার্য হয়েছে ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের এক সোমালি শিক্ষার্থী। সর্বশেষ ২০১৯-২০ সেশনে মাত্র চারজন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। 

এদের মধ্যে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হওয়া আটজনের মাত্র দুইজন শিক্ষার্থী বর্তমানে অধ্যায়নরত আছে। পাশ করে গেছে দুইজন। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হওয়া চারজনের মধ্যে আছে একজন। বাকি তিনজন পাশ না করেই দেশে ফিরেছে। ফার্মাসি বিভাগের ভর্তি হওয়া ছয়জনের মধ্যে আছে দুইজন। ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স বিভাগের ১২ শিক্ষার্থীই নিয়মিত বলে জানিয়েছেন বিভাগের সভাপতি। ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অনার্স-মাস্টার্স মিলিয়ে তিনজন বিদেশি ভর্তি হলেও অনার্সের শিক্ষার্থী বিভাগটিতে অধ্যায়নরত নেই।  

অপরদিকে, স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ২০১৬-১৭ সেশন থেকে এ পর্যন্ত ৪৩ জন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। এদের মধ্যে একজন ভারতীয় ছাড়া বাকিরা সবাই সোমালিয়ার। বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী এদের মধ্যে ১৯ জন শিক্ষার্থী স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন। সে হিসেবে ৪৩ জনের মধ্যে অধ্যায়নরত থাকার কথা ২৪ জনের। কিন্তু স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর পর্যায়ে কারা পাশ করেছে বা ড্রপ আউট হয়েছে সে সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য-উপাত্ত নেই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাখায়। এ শাখার একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা পাশ করা শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট দিলেও কে কোন দেশের সে সম্পর্কে কিছু জানেন না।

এদিকে স্নাতক-স্নাতকোত্তর মিলিয়ে মোট ৭৭ জন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মীর আব্দুল কাইয়ুম ইন্টারন্যাশনাল ডরমিটরিতে থাকার কথা থাকলেও তাদের হাতে পিএইচডিসহ মাত্র ২৫ জনের তথ্য পাওয়া গেছে। বাকিদের বিষয়ে কোনো তথ্য-উপাত্ত দিতে পারেননি ডরমিটরির ওয়ার্ডেন অধ্যাপক আশাদুল ইসলাম। তবে কয়েকজন নেপালি শিক্ষার্থী ভ্যাক্সিন নিতে দেশে গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

এসব তথ্যের খোঁজে গিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া এক সোমালি শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে ঢাকা পোস্ট। 

আহমমেদ মোহোমউল আলী। ক্যাম্পাসে হোসনি থামির নামে পরিচিত। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে মোটামুটি জনপ্রিয় তিনি। রাবি থেকে সর্বশেষ ঝরে পড়ে এ সোমালি শিক্ষার্থী। ২০১৭ সালে যেবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রেকর্ড সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী আসে সেবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগে স্নাতকে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে মোট পাঁচ বছরে শুধু একটি বিষয়ে তিন বছর অকৃতকার্য হয়েছেন। সর্বশেষ অযোগ্য সাব্যস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তাকে। কিন্তু প্রথমে কিছু অভিযোগ তুলেও চুপ হয়ে যান তিনি। এসব বিষয় নিয়ে কথা বললে নিজ দেশ সোমালিয়ায় ফেরা নিয়ে শঙ্কার কথা বলেন তিনি।

পরে তার ফলাফল সম্পর্কিত কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ঢাকা পোস্ট। সেখানে দেখা যায়, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয় সে বছরের ৭ ডিসেম্বর। প্রথম বর্ষ প্রথম সেমিস্টারে মোহোমউল আলী সব বিষয়ে পাশ করে ২.৭৫ জিপিএ পেয়েছিলেন। সে ফলাফলে বিভাগটি থেকে সর্বোচ্চ ৩.৮০ থেকে সর্বনিম্ন ১.৩৫ জিপিএ পর্যন্ত অর্জন করে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। সে হিসেবে মোহোমউল আলীর ফলাফল মাঝামাঝি পর্যায়ের। 

কিন্তু পরবর্তী সেমিস্টারে অর্থাৎ প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারে এসে একটি কোর্সে অকৃতকার্য হয়ে ২.৫৮ জিপিএ পান। সে সময় বিভাগটির সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ফলাফল ছিল ৩.৮৩ এবং ১.৮৩। এ সময় মোহোমউলসহ ১১ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয় কোর্সটিতে (১০৯)। ফলাফলের নথিপত্র অনুযায়ী এটাই একমাত্র কোর্স যেটাতে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছিলেন। 

পরবর্তী বছর ২০১৮ সালে, দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারে ২.৫০ জিপিএ পান মোহোমউল। এবারও সব কোর্সে অকৃতকার্য হন তিনি। ভর্তির বছর অর্থাৎ, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত অন্তত তিনবার সে কোর্সের পরীক্ষা দেন তিনি। এতে ২০১৮ সাল থেকে চার বছরে দ্বিতীয় বর্ষে আটকে আছে তার শিক্ষাজীবন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভাগটির এক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিদেশি শিক্ষার্থী থাকার পরও বাংলায় পাঠদান নিয়ে ক্লাসের বাইরে আলোচনা করেছিলেন থামির। পরে সে তথ্য শিক্ষকের কাছে পৌঁছে যায়। সে সময় কীভাবে সে (মোহোমউল) বাংলাদেশ থেকে পাশ করে সেটি দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন বিভাগের এক অধ্যাপক।

একই কোর্সে পর পর তিন বছর একজন বিদেশি শিক্ষার্থীর কৃতকার্য হতে না পারার বিষয়ে কথা হয় বিভাগের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুসের সঙ্গে। তিনি বলেন, একই বিষয়ে সে তিনবার ফেল করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ড্রপ আউট হয়েছে। ক্লাসে বিদেশি শিক্ষার্থী থাকায় ক্লাসগুলো ইংরেজিতে নিয়েছি। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় পড়াশোনা করার যোগ্যতা সে রাখে না। সোমালিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশের তুলনায় নিম্নমানের। ফলে সেখানে পড়াশোনা করে আমাদের ব্যবস্থায় মানিয়ে নেওয়া তাদের জন্য কষ্টসাধ্য। 

ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কোর্সটি পড়ান ২০১৯ সালে নিয়োগ পাওয়া বিভাগের প্রভাষক রাকিবুল ইসলাম নীরব। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এটা পরিসংখ্যান কোর্স। আপনি না লিখলে আমি কীভাবে নম্বর দিব? এই বিদেশি শিক্ষার্থীকে আমি কখনো ক্লাসে পাইনি। বাইরে তাকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে দেখা যায়।  যদিও নিয়মানুযায়ী মোহোমউল আলীর তখন দ্বিতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারে থাকার কথা। 

বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থে শুধুমাত্র ডরমিটরিতে থাকার সুবিধাই দেওয়া হয় প্রশাসনের দিক থেকে। একাডেমিক বা আবাসিক নানান সমস্যা আর অসহযোগিতার শিকার হবার পরও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চান না এসব শিক্ষার্থী। তারা বলছেন, কোনো বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি নেই আমাদের। এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দিক থেকে দূতাবাসে জানিয়ে আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়।

তারা বলছেন, বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য দেওয়া রাবির ভর্তি নোটিশে পাঠ্যক্রমের কথা ইংরেজিতে জানিয়েও বাংলায় লেকচার দেওয়া হয়। আবার বাংলাদেশে পড়তে আসার সময় বাংলা বা ইংরেজিতে কতটা দক্ষ তার কোনো যাচাই-বাছাই করা হয় না। কোনো ধরনের ভাষা শিক্ষা কোর্সও করানো হয় না, যেটা বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্রাশ কোর্স হিসেবে করানো হয়।

পড়তে আসা বিদেশি শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া, বাংলায় পাঠদান ও অন্যান্য সমস্যাগুলোর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমরা বিভিন্ন বিভাগের সভাপতিদের সঙ্গে বসব। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এসব সমাধানের চেষ্টা করব। তবে তাদের সমস্যার বিষয়গুলো নিয়ে বিদেশিরা যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করার তাগিদ দেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. তারেক নূর বলেন, মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা তাদের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে। তারা যে পরিমাণ রেজাল্ট নিয়ে আসে সে পরিমাণ ফিডব্যাক দিতে পারে না। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দিক থেকে বিদেশি শিক্ষার্থী থাকা বিভাগগুলোকে সবকিছু ইংরেজিতে চালানোর জন্য বলা হয়। এ ছাড়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য তিন মাসের একটা ভাষা কোর্স চালু করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে কথা হয় পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকিবের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণাটা আন্তর্জাতিক। এমনকি আমেরিকান অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে সেখানকার শিক্ষার্থীদের চেয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বেশি। আমাদের বিদেশি শিক্ষার্থীর দরকারটা অনেক বেশি। যদি একটি দেশের বা এলাকার শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় তার সার্বজনীন চেহারা ধারণ করতে পারে না। 

তবে বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের মান বিবেচনায় রাখার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশ থেকে যেসব শিক্ষার্থীরা বিদেশে পড়তে যায় তারা মোটামুটি সবাই-ই ক্লাসের ভালো ছাত্র। আমাদের বিদেশি শিক্ষার্থী দরকার কিন্তু ভর্তির সময় কোন মানের শিক্ষার্থী নিচ্ছি সেটা বিবেচনায় রাখা দরকার।

আরআই