প্রায় তিন বছর পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়েছে। নতুন এই কমিটিতে ইব্রাহিম ফরাজী সভাপতি ও আকতার হোসেন সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন। গত ১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ৩৫ সদস্যের আংশিক এই কমিটির অনুমোদন দেন।

ছাত্রলীগের সুপার ফাইভ ইউনিটের অন্যতম একটি জবি ছাত্রলীগ। প্রায় দুই ডজন পদ প্রত্যাশী শীর্ষ পদের জন্য তদবির চালিয়ে গেছেন। অবশেষে কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটি ঘোষণার পরই পদ পেয়ে খুশিতে বন্যায় ভাসছেন অনেকেই। আবার পদ না পেয়ে অনেকেই ছাত্র রাজনীতির ইতি টানছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ পাওয়া ছাত্রলীগ পদপ্রত্যাশীদের এই বৈচিত্র্যময় আবেগ সবার নজর কেড়েছে।

সহ সভাপতি পদ পাওয়া ইব্রাহিম হোসেন সানিম লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ সভাপতি পদ পেলাম। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে লিখেন, জগন্নাথের নাজমুল ভাই, নিজের মূল্যায়ন না হলেও কর্মীর মূল্যায়ন করতে ভুলেন নাই। আল্লাহ যা করে ভালোর জন্য করেই। যতটুকু অর্জন সব আপনার অবদান।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া মুন্নী আক্তার ও ফওয়াজিয়া জাফরিন প্রিয়ন্তী লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।

কমিটিতে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে পদ পাওয়া সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল রায়হান লিখেছেন, অভিনন্দন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সকল নেতৃবৃন্দকে। সেই সাথে আমাকে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করায় ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি। অশেষ ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সংগ্রামী সভাপতি জয় ভাই এবং আমার রাজনীতির শেষ ঠিকানা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক লেখক দাদার প্রতি।

এদিকে কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়ায় ক্ষোভ ঝেড়েছেন পদপ্রত্যাশী অনেক নেতা। সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সাবেক আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম টিটন লিখেছেন, ক্ষমা করিস, ভালো থাকিস (ছোট ভাইদের প্রতি)। স্বপ্নেও ভাবিনি তোদেরকে সংগঠন এভাবে প্রতারিত করবে।

সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শান্ত নাজমুল বাবু লিখেছেন, অধম ভাইটাকে ক্ষমা করে দিস। তোদের স্বার্থহীন ভালোবাসার কাছে আমি বারবার কৃতজ্ঞ। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ উত্তম পরিকল্পনাকারী। তোদের কাছে একটাই প্রত্যাশা জীবনে যত খারাপ পরিস্থিতিই আসুক না কেনো, কখনোই বঙ্গবন্ধুর আদর্শচ্যুত হইস না।

সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাকিল লিখেছেন, মাফ করে দিস। তোদের ঋণ শোধ করার সাধ্য নাই। কারো জন্য কিছুই করতে পারলাম না।

নাহিদ পারভেজ লিখেছেন, মাফ চাই। অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করলাম। আমার জীবন দিয়ে যদি ছোট ভাইদের জন্য কিছু করতে পারতাম, তাই করতাম।

হোসনে মোবারক রিসাদ লিখেছেন, প্রিয় মুজিব আদর্শের একনিষ্ঠ অনুজরা। আমার প্রতি তোমাদের যে নিঃস্বার্থ ভালবাসা তা কোনো কিছু দিয়ে প্রকাশ সম্ভব না। তোমাদের কাছে আমি সারা জীবন ঋণী। বিদায় বেলায় কোনো কিছু দিয়ে যেতে পারলাম না, নতমস্তকে ক্ষমাপ্রার্থী। তোমরা তো দেখেছো পরিশ্রম, চেষ্টার কোনো কমতি ছিলনা। হয়তোবা কপালে ছিল না। সবাই ভালো থেকো, সুস্থ থেকো। তোমাদের প্রতি ভালবাসা আমৃত্যু। পারলে ক্ষমা করে দিও।

সাবেক দফতর সম্পাদক ও নতুন কমিটিতে সহ সভাপতি পদ পাওয়া শাহবাজ হোসেন বর্ষন লিখেছেন, ক্ষমা করিস তোরা আমাকে।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া নুরুল আফসার লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট (ছাত্রলীগ সভাপতি জয়) এভাবে অপমানটা না করলেও পারতেন! আল্লাহ আপনাকে ক্ষমতা দিয়েছেন, মানুষকে মূল্যায়ন করলে আপনার ক্ষমতা কমে যেতো না। ক্ষমতা চিরদিনের নয়। ৪ বছর আগেই সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলাম, ৪ বছর পর এসে সাংগঠনিক থেকে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দিলেন! আপনি অনেক বড় ন্যায় বিচারক! আপনার কাছ থেকে এতোটা অপমান আশা করিনি! আপনি আমার সাথেই আপনার নির্মমতাটা দেখালেন। হাসতে হাসতে আমাকেই ছুড়ি মারলেন। রাজনীতির শিকারটা আমাকেই বানালেন আপনি।

সাবেক সহ সম্পাদক তৈয়ব আলী লিখেছেন, ‘রিক্ত আমি, সিক্ত আমি দেওয়ার কিছু নাই; আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই’। ছোট (ভাই) তোরা আমাকে ক্ষমা করে দিস। তোদের জন্য কিছুই করতে পারলাম না। ভালো থাকুক প্রাণের সংগঠন। মৌমিতা তাজিন ইতু লিখেছেন, দীর্ঘ ৯ বছরে নিজের আর পরিবারের সাথে যে প্রতারণা করেছি তা কোনোদিন আমাকে ক্ষমা করবে না জানি! তবুও সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। পরিশ্রম ছাড়া তোমাকে (ছাত্রলীগ) দেওয়ার মতো আমার কিছুই ছিলো না। নিংড়ে দিয়েছি সর্বস্ব তোমায়! ভালো থেকো।

এমটি/এমএইচএস