ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অভ্যন্তরীণ অনুষদগুলোর ডিন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, এই নির্বাচনে করোনায় আক্রান্ত বেশ কয়েকজন শিক্ষক ভোট দিয়েছেন। ঢাকা পোস্টের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেছেন নির্বাচন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, আমরা সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু করেছি। যারা এমন আক্রান্ত তারা অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে গাড়ির ভেতরে থেকে ভোট দিতে পারবে এই সুবিধাটাও রেখেছি। তাদের সমস্ত প্রসেস গাড়িতে কমপ্লিট হবে। এমন ৭-৮ জন শিক্ষক ছিলেন, নিয়ম মেনে সকল কাজ গাড়ির মধ্য থেকে করে তারা ভোট দিয়েছেন। 

অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন বলেন, এর বাইরে কেউ যদি করোনা আক্রান্ত স্বীকার না করে ভোট দিয়ে থাকেন সেটি আমাদের বোঝার উপায় নেই। আমিও শুনেছি করোনা পজিটিভ কেউ কেউ তথ্য গোপন করে ভোট দিয়েছেন। অথচ আমরা বিশেষ ব্যবস্থায় করোনা আক্রান্তদের ভোট দানের সুবিধা রেখেছিলাম। কিছু শিক্ষক আক্রান্ত থাকার কারণে রিস্ক নিয়ে ভোট দিতে আসেননি বলেও জেনেছি।

গাড়ি থেকে কোন কোন শিক্ষক ভোট দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফারুক আহমদ, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম, ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. গাজী মুহাম্মদ হাসান জামিল, ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আবু সারা শামসুর রউফ- এই নামগুলো আমার হাতে রয়েছে। আরও কয়েকজন শিক্ষক আছেন।

বিষয়টি স্বীকার করেছেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, আমি এখন আইসোলেশনে আছি। ডিন নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়েছিলাম। তবে গাড়ির মধ্যেই সব প্রসেস সম্পন্ন করেছি।

এর আগে সকাল ৯টা থেকে উৎসব মুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার জন্য সকাল থেকে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে এসেছেন, প্রার্থীরাও ভোটারদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। বিকেল তিনটার দিকে ফলাফল ঘোষণা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার।

ঢাবিতে মোট ১৩টি অনুষদ রয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১০ অনুষদে। বাকি তিন অনুষদ- শিক্ষা অনুষদ, চিকিৎসা অনুষদ এবং স্নাতকোত্তর চিকিৎসা বিজ্ঞান ও গবেষণা অনুষদে সরকারের পক্ষ থেকে ডিন মনোনীত করা হয়। ঢাবির আইন অনুযায়ী, ডিনরা দুটি একাডেমিক শিক্ষাবর্ষের জন্য নির্বাচিত হবেন।

এবারের নির্বাচনে ১০টি অনুষদের মধ্যে ৮টি অনুষদের ডিন পদে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল নীল দল ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল সাদা দলের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। বাকি দুটি অনুষদে সাদা দলের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় নীল দলের প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।

এআর/এইচকে