দেশের পরিবহন খাতকে ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনতে ‘গো বাংলাদেশ’ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থী। অ্যাপটি গো বাংলাদেশ প্রকল্পের আওতায় তৈরি করা হয়েছে।

এ প্রকল্পটি ‘মুজিব ১০০ আইডিয়া’ প্রতিযোগিতা-২০২১ এ সেরা ১০০ এর মধ্যে ৩০তম স্থান দখল করেছিল। এরই মধ্যে একটি পরিবহন কোম্পানি এ অ্যাপ ব্যবহারে আগ্রহী হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অ্যাপটির সঠিক ব্যবহার করা গেলে গণপরিবহনের নিত্যদিনের সব ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবে নগরবাসী। আসবে গণপরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলাও।

জানা গেছে, ‘গো বাংলাদেশ’ প্রকল্পটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনভিত্তিক একটি আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা, যা বর্তমান সিস্টেমের বিকল্প, নির্ভুল, নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য এবং সাশ্রয়ী। কিউআর কোড, ডিজিটাল ওয়ালেট, মোবাইল ব্যাংকিং এবং ট্র্যাকিং সিস্টেম ব্যবহার করে অ্যাপ্লিকেশনটির মাধ্যমে যাত্রী পরিবহন শ্রমিক ও পরিবহন মালিকদের একই ছায়াতলে নিয়ে আসতে সক্ষম হবে প্রকল্পটি।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনিবন্ধিত বাস ও ড্রাইভার এ সিস্টেম ব্যবহার করতে পারবে না। বাসের প্রতিটি সিটের পেছনে একটি করে কিউআর কোড লাগানো থাকবে। যাত্রী যে সিটে বসবেন তার সামনের সিটের পেছনে সেই সিটের কিউআর কোডটি থাকবে। যাত্রী তার সামনের কিউআর কোডটি স্ক্যান করার মাধ্যমে শুধুমাত্র গন্তব্য সিলেক্ট করে ভাড়া দিতে পারবেন। ডিজিটাল ওয়ালেট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হবে। এছাড়া এ অ্যাপের মাধ্যমে অগ্রিম টিকিটও বুক করে রাখা যাবে। ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোনো মন্তব্য বা অভিযোগ থাকলে যাত্রীরা তা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত প্রদান করতে পারবে। যা সরাসরি পরিবহন মালিকরা দেখতে পারবেন। এতে যাত্রী হয়রানি বন্ধ হয়ে যাবে। যাত্রীরা তাদের ভাড়া বিকাশ, নগদ, রকেট বা কার্ডের মাধ্যমের প্রদান করতে পারবেন। যাত্রীদের এ পেমেন্ট সরাসরি পরিবহন মালিকের মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টে যোগ হবে। পরবর্তীতে মালিক তার বাসের চালককে ভাড়া কিংবা বেতন দেবেন।  এছাড়াও তিনি (মালিক) যেকোনো সময় বাসের অবস্থান, ড্রাইভারের বিস্তারিত, যাত্রীর তথ্য এবং যাত্রীদের অভিযোগগুলোও দেখতে পারবেন।

এদিকে সিটি ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ‘সিএসসি ফেস্টিভ্যাল-২০২১’ এ ‘আইডিয়া, ইনোভেশন অ্যান্ড ইনভেনশন’ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে গো বাংলাদেশ প্রকল্পটি। প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য গত রোববার ‘ইনোভেশন ডিজাইন অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনারশিপ একাডেমি’ (আইডিইএ) থেকে ১০ লাখ টাকার ফান্ড পাওয়া গেছে। এছাড়া “হিমাচল পরিবহন” জবি শিক্ষার্থীদের তৈরি করা সিস্টেমটি ব্যবহারের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে ওই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম।

এ সময় তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও সৃষ্টিশীল কাজের পাশে আমরা সবসময় আছি। তরুণদের এমন উদ্ভাবনী কাজের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।

এমটি/এসকেডি