ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা এক ব্যতিক্রমধর্মী মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছেন। সেটি হচ্ছে তাদেরই এক সহপাঠীর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের বাংলা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান রবিনের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিয়ের অনুষ্ঠানে সব বন্ধুরা উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলেই ক্যাম্পাসে এমন ভিন্নধর্মী গায়ে হলুদের আয়োজন করেছেন সহপাঠীরা। হলুদে রবিনের বন্ধুরাসহ অংশ নিয়েছে হলের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরাও।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের একই বর্ষের রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ওয়াফা বিনতে ওয়াকির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন রবিন। আগামীকাল (১১ ফেব্রুয়ারি পারিবারিকভাবে ধর্মীয় রীতি অনুসারে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।
রবিনের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। ওয়াকির বাড়ি কুমিল্লা জেলার সদর উপজেলায়।

ব্যতিক্রমী এ আয়োজনের খবরে সরগরম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট প্লাটফরমগুলো। এমন আয়োজনে মুগ্ধ শিক্ষার্থীরা। জামাই হল নামে পরিচিতি পাওয়া সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে এই আয়োজন হওয়ায় তা পেয়েছে বাড়তি আমেজ। এছাড়া রোকেয়া হল নিয়েও শিক্ষার্থীদের মাঝে কৌতূহল রয়েছে।

ফেসবুকে মোহাম্মদ তানভীর নামের এক শিক্ষার্থী লেখেন, জামাই হলের সঙ্গে রোকেয়া হলের এ সম্পর্ক চিরন্তন হোক। এমন সাহসী সিদ্ধান্তের পথ তৈরি করে দিয়ে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হওয়ায় এই যুগলকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের ছাত্র-ছাত্রীর পক্ষ থেকে অনিঃশেষ ভালোবাসা আর শুভকামনা।

এ ভিন্নধর্মী আয়োজন নিয়ে রবিনের বন্ধুরা জানান, বিয়েতে সবার পক্ষে বাড়িতে যাওয়া সম্ভব না। তাই বন্ধুর বিয়ের মজা করতে ক্যাম্পাসে এই হলুদের ব্যতিক্রমী আয়োজন। আমরা সব বন্ধুরা মিলে আয়োজন করেছি। আয়োজনে আমাদের বিভাগ ও হলের সিনিয়র এবং জুনিয়ররা সহযোগিতা করেছেন।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান রায়হান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এমন গায়ে হলুদ দেখে সত্যিই আমাদের অনেক ভালো লাগছে। যেখানে আমরা একটা পরিবারের মতো কাটাই, সেখানে পরিবারের একজন সদস্য রবিন ভাইয়ের বিয়ে তাও আবার আমাদের হলে এটা অনেক আনন্দদায়ক স্মৃতি হয়ে থাকবে। একটি ইতিহাস সৃষ্টি হলো সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে।

মাইনুল ইসলাম নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, জামাই হল টু রোকেয়া হল। নিঃসন্দেহ এটি একটি চমৎকার ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন। মেয়েদের হলের ট্রেন্ডটা ভেঙে ছেলেদের হলে এমন বিয়ের আয়োজন, এর চেয়ে সুন্দর অনুভূতি আর কী হতে পারে! সত্যি বলতে আবাসিক হলে থেকেও যে এভাবে সবার সঙ্গে বিয়ের আনন্দটা ভাগাভাগি করে নেওয়া যায়, সেটি আমাকে খুবই অবাক করেছে!

এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে রবিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনাসহ অন্যান্য ব্যস্ততার জন্য বন্ধুরা সবাই বিয়েতে থাকতে পারবে না। তাই মজা করেই এই গায়ে হলুদের আয়োজন করেছে। আমিও জানতাম না তাদের এই পরিকল্পনা। অনেক বেশি সারপ্রাইজ হয়েছি। এটা আসলে বন্ধুদের কাছে থেকে পাওয়া বড় উপহার। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।

এইচআর/এমএইচএস