ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের আয়া মেঘলার বিরুদ্ধে। শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে ট্রলিতে করে ওই রোগীকে এনে হাসপাতালের সামনের সড়কে খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখা হয়।

পরে স্থানীয়রা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুনরায় ওই রোগীকে তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই রোগীর নাম মোশারফ হোসেন (৫৮)। তার বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা এলাকায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোশারফ হোসেন ঝিনাইদহ থেকে ফরিদপুরে দিনমজুরের কাজে এসেছিলেন মাসখানেক আগে। ২৫ দিন আগে জেলার মধুখালী উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন তিনি। মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে। এরপর তাকে প্রথমে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এরপর থেকে গত ২২ দিন সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন মোশারফ হোসেন। 

আজ সকালে হাসপাতালের আয়া মেঘলা ট্রলিতে করে তাকে নিয়ে এসে হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে ফরিদপুর-বরিশাল সড়কে ফেলে রেখে যান। পরে স্থানীয়রা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুনরায় ওই রোগীকে তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

ভুক্তভোগী মোশারফ হোসেন জানান, অনেক অনুনয় বিনয় করলেও হাসপাতালের লোকজন তাকে কোনো চিকিৎসাসেবা দেয়নি। কোনো মতে হাসপাতালের এক কোণে তাকে ফেলে রাখা হয়েছিল।
তাকে একটি ওষুধও দেওয়া হয়নি হাসপাতাল থেকে। আজ সকালে রাস্তার মধ্যে ফেলে দিয়ে গেছে।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন জানান, হাসপাতালের সামনের সড়কে এক বৃদ্ধকে ফেলে রাখা হয়। এলাকাবাসী ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে হাসপাতালের আয়া এসে পুনরায় তাকে নিয়ে যান। 

এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. সাইফুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি কোনো আয়া এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন সরকার বলেন, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান রোগী মোশাররফ হোসেনের বিষয়টি জানার পর তার চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছেন। 

জহির হোসেন/আরএআর