জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেছেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকলে দেশের নারী সমাজ নিরাপদে থাকে। কিন্তু বর্তমান সরকারের প্রধান শত্রু এ দেশের নারী সমাজ। আপনারা দেখেছেন, কীভাবে সরকারের দোসররা স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ, বাবার সামনে মেয়ের ইজ্জতহানি করেছে। নারীদের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পর আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে, জনগণের অধিকার হরণ করেছে। 

শুক্রবার (১১ মার্চ) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাংগঠনিক মতবিনিময় সভার উদ্বোধন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। 

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহিন শওকত। মতবিনিময় সভার প্রধান বক্তা ছিলেন, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক মোসা. সুলতানা আহমেদ। 

সভায় আফরোজা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কথায় কথায় বলেন, বিএনপি নাকি রাজপথে নেই। অথচ দৃশ্যমান পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো। বিএনপিকে টুকরো টুকরো করতে নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে তারা। বরং বর্তমানে আওয়ামী লীগ নামক রাজনৈতিক দলই রাজপথে নেই। অনিয়ম-দুর্নীতি করে রাষ্ট্রের অর্থ লুটপাট করতে তারা এখন ব্যস্ত। বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এসবের দাঁত ভাঙা জবাব দিবে দেশের জনগণ। 

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যপুস্তকে ভুল তথ্য দিয়ে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। নতুন প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বর্তমান সরকার। কিন্তু নতুন প্রজন্ম তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে এসব ভুল তথ্য প্রত্যাখ্যান করেছে। তথ্য-প্রযুক্তির কল্যাণে নিশ্চয় জনগণ সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে। ১০ টাকা কেজি চাল,  ঘরে ঘরে চাকরি দিতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। প্রতিশ্রুতি পূরণে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে তারা।

আফরোজা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ হলে দেশ অসুস্থ হয়ে যায়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বার্থে তিনি কখনও মাথা নত করেননি অবৈধ সরকারের কাছে। সীমা লঙ্ঘনকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন না। আওয়ামী লীগ সরকার অনিয়ম-দুর্নীতি, জুলুমে সীমা লঙ্ঘন করেছে। প্রদীপ নিভে যাওয়ার আগে বেশি জ্বলে। তারপরই নিভে যায়। সরকারের অবস্থাও এমন হবে। 

মহিলা দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকার পতনের আন্দোলনে অংশ নিতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের নেত্রী স্বামীকে হারিয়েছেন, ছেলেকে বিসর্জন দিয়েছেন। তাই আসুন সবাই মিলে নেত্রীর মুক্তির সংগ্রামে যোগ দিন। কারণ আমরা কেউ ভালো নেই। দেশকে ভালোবাসলে, দলকে ভালোবাসলে নিজেদের মধ্যে হানাহানি না করে শক্তিশালী সংগঠন প্রস্তুত করতে সবাই মিলে কাজ করুন। 

রাজশাহী বিভাগীয় জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের দল প্রধান জাহান পান্নার সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম জাকারিয়া, সিনিয়র যুগ্ম অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম টিপু ও সদস্য সচিব আলহাজ রফিকুল ইসলাম। 

এ সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আলহাজ মাওলানা আব্দুল মতিন, জেলা মহিলা দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েমা খাতুন, মহিলা দলের নেত্রী দিলশাদ তাহমিনা বেগম্, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা মহিলা দলের প্রস্তাবিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাসউদা আফরোজ হক শুচিসহ বিএনপি ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।  

জাহাঙ্গীর আলম/আরএআর