দুই হাজার কোটি টাকার অর্থপাচার মামলায় গ্রেপ্তার দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত এবং ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের মালিকানাধীন সাউথ লাইন পরিবহনের ১২টি বাস পোড়ানোর ঘটনায় মামলা হয়েছে। শনিবার (১২ মার্চ) রাতে মামলাটি করা হয়।

এদিকে এ ঘটনা তদন্তে রোববার দুপুরে একটি কমিটি গঠন করেছে জেলা পুলিশ। তিন সদস্যের কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। 

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অর্থপাচার মামলায় আদালতের মাধ্যমে সাউথ লাইন পরিবহনের মোট ২২টি বাস আলামত হিসেবে জব্দ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। জব্দ করা বাসগুলো রক্ষণাববেক্ষণের দায়িত্বে ছিল ফরিদপুর জেলা পুলিশ। বাসগুলো শহরের গোয়ালচামটস্থ ওজোপডিকো কার্যালয়ের সামনে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পশ্চিম গোয়ালচামট মহল্লায় সাজ্জাদ হোসেন বরকতের মালিকানাভুক্ত জায়গায় রাখা ছিল।

শুক্রবার রাত পৌনে ১টার দিকে ১২টি বাসের সামনের সারির দক্ষিণ দিক থেকে দ্বিতীয় বাসে আগুন জ্বলে উঠতে দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন এক বাস থেকে অন্য বাসে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের একটি দল দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় রাত আড়াইটার দিকে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। কিন্তু ততক্ষণে ১২টি বাস পুড়ে যায়।

এরপর শনিবার রাতে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল গফ্ফার বাদী হয়ে বাস পোড়ানোর ঘটনাকে নাশকতা উল্লেখ করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।

এদিকে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আজ ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করেছেন। এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) মো. ইমদাদ হোসেনকে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. হেলালউদ্দিন। আগামী পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে গঠিত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, বাস পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাটি বিভিন্ন দিক মাথায় রেখে তদন্ত কাজ শুরু করা হয়েছে। এ বাসগুলোর নিরাপত্তায় নিয়োজিত নৈশ্য প্রহরী শেখ মোহাম্মদ আলীকে জিজ্ঞাসাবদ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যে বা যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বাস পোড়ানোর ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ফরিদপুরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো ছিল। কিন্তু বাসগুলো পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাটি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন তিনি।

জহির হোসেন/এসপি