গরু কিনতে মুন্সীগঞ্জ জেলা থেকে বাসযোগে চুয়াডাঙ্গায় আসছিলেন চারজন। পথিমধ্যে বাসের ভেতরে এক শসা বিক্রেতার কাছ থেকে শসা কিনে খাওয়ার পর অচেতন হয়ে পড়েন তারা। এই সুযোগে প্রতারক চক্র তাদের কাছে থাকা গরু কেনার নগদ আট লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। 

বাসটি চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছালে সুপারভাইজার ওই চারজনকে অচেতন অবস্থায় স্থানীয়দের কাছে হস্তান্তর করে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে। মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তভোগীরা হলেন- মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরের গরুর খামারি শেখ সাহাবুদ্দিন সেন্টু (৪৫), তার ছেলে শেখ নিবিড় (২০), ভাই শেখ হারেজ আলী (৫০) এবং খামারের কর্মচারী দিদার আলী (৫০)।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে শেখ নিবিড় বলেন, মুন্সীগঞ্জে আমাদের গরুর খামার আছে। মঙ্গলবার সকালে খামারের জন্য গরু কিনতে বাবাসহ চারজন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার পশুর হাটে যাচ্ছিলাম। লোকাল বাসযোগে ফরিদপুরের ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে যাই। সেখান থেকে চুয়াডাঙ্গাগামী আলসানি পরিবহনে উঠি আমরা। ফরিদপুর জেলার মাঝামাঝি পৌঁছালে বাসের মধ্যে থেকে শসা কিনে খাই। এর কিছুক্ষণের মধ্যে আমার সবাই অচেতন হয়ে পড়ি। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এসে আমার জ্ঞান ফেরে।

তিনি আরও বলেন, গরু কেনার জন্য স্কুলব্যাগে আট লাখ টাকা নিয়ে আসছিলাম। সেই টাকার ব্যাগ পাওয়া যায়নি।

আলসানি পরিবহনের সুপারভাইজার ফারুক হোসেন বলেন, তারা চারজন ফরিদপুরের ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে ওঠেন। চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছালে তাদেরকে অচেতন অবস্থায় পাই। পরে চুয়াডাঙ্গা ডাক বিভাগের সামনে স্থানীয়দের কাছে তাদের হস্তান্তর করি। 

তিনি আরও বলেন, আমরা যাত্রীদের সব সময় সতর্ক করে থাকি বাইরের কোনো কিছু খাবেন না। একটু সতর্ক হলে প্রতারক চক্রের হাত থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন বলেন, চারজনই শঙ্কামুক্ত। তাদেরকে চেতনানাশক জাতীয় কিছু মিশিয়ে খাওয়ানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুজনের জ্ঞান ফিরলেও অপর দুজনের জ্ঞান ফেরেনি। তাদেরকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।  

চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, রাজবাড়ী থেকে বাসের মধ্যে শসা খেয়ে তারা অচেতন হয়েছে। বাসের সুপারভাইজার চুয়াডাঙ্গায় নামিয়ে দিলে পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। তারা সুস্থ হলে জানা যাবে কত টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্রটি। আমরা ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছি।

আফজালুল হক/আরএআর