রংপুরের তারাগঞ্জে এক গৃহবধূকে নির্যাতন ও জোরপূর্বক গর্ভপাত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নির্যাতিতা গৃহবধূর দায়ের করা মামলায় তার শ্বশুরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে গ্রেপ্তার আজিজুল হককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে বুধবার রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পাঁচজনকে আসামি করে তারাগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতা গৃহবধূ রাজিনা আখতার। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ওই মামলায় আসামি আজিজুল হককে গ্রেপ্তার করেন।

এগিকে মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের জুলাই মাসে তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের রহিমাপুর হাজীপাড়া গ্রামের জনৈক আজিজের মেয়ের (১৯) সঙ্গে একই গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে মাহাবুল ইসলাম বিয়ে হয়। বিয়ের পর যৌতুকের টাকার জন্য মেয়েটিকে তার স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন বিভিন্ন সময় মারধর করেন। বাধ্য হয়ে তিন দফায় মেয়েটি তার পরিবারের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা এনে তার স্বামী মাহাবুলকে দেন। এরই মধ্যে মেয়েটি গর্ভে সন্তান ধারণ করলে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে তার স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন। গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে তাকে চাপ দেয়া হলে তাতে রাজি না হওয়ায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন বিভিন্ন পথ খুঁজতে থাকেন।

একপর্যায়ে গত বছরের ১৪ জুলাই মেয়েটির শ্বাশুড়ি ও ননদ তাকে রান্না করা সেমাইয়ের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে জোর করে খাওয়ান। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর পেটের ব্যথা অনুভব করে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে তাকে রংপুরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মৃত সন্তান গর্ভপাত করান। ওই ঘটনার পাঁচ মাস পর মেয়েটিকে তার স্বামী মাহাবুল তালাকের অবহিতকরণ নোটিশ দেন। যৌতুকের জন্য নির্যাতন ও জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর ঘটনায় বুধবার নিজে বাদী হয়ে স্বামী-শ্বশুর, শাশুড়ি-ননদসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন রাজিনা আখতার।  

এ ব্যাপারে তারাগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক আহম্মেদ বলেন, পাঁচজনকে আসামি করে ওই গৃহবধূ থানায় মামলা করেছেন। একজনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএএস