বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে ‘কাঁচা বাদাম’ গানে নাচ, যা বলছে কর্তৃপক্ষ
পাবনার ঈশ্বরদীতে একটি স্কুলে ‘কাঁচা বাদাম’ গানের তালে নেচে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন পালনের ভিডিও ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঈশ্বরদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আকতার। শনিবার (১৯ মার্চ) বিকেলে ঢাকা পোস্টকে তিনি এ কথা জানান।
বিজ্ঞাপন
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের মানিকনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ‘কাঁচা বাদাম’ গানের তালে উদ্যাম নাচে মেতে ওঠে শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানের ভিডিওটি বিদ্যালয়ের নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে লাইভ করা হয়। পরে এই অনুষ্ঠানের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয়। ভিডিওটি ডিলিট করা হয় বিদ্যালয়ের ফেসবুক আইডি থেকে।
ঈশ্বরদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম আকতার বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে অশোভনীয় কাঁচা বাদাম ও হিন্দি গান পরিবেশন করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা পরে বিষয়টি শুনেছি। শোনার পরপরই ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়। এরপরই বিদ্যালয় প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, আগামীকাল রোববার বিদ্যালয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হবে। প্রথমেই আমরা বিদ্যালয় প্রধানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেব। কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে শিক্ষার্থীদের কোনো অপরাধ দেখছি না। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ধরনের নাচ-গান কেন করাল বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
মানিকনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমান জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা, আলোচনা, দোয়া ও পুরস্কার বিতরণ বিতরণের আয়োজন করা হয়েছিল। পরে শিক্ষার্থীরা মঞ্চে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে নাচ-গানের অনুষ্ঠানে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কাঁচা বাদাম ও হিন্দি গান পরিবেশেন করেছে। আমি সেখানে উপস্থিত থাকলে এমনটি হতো না। ছোট্ট একটি বিষয় এখন অনেক বড় পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিএম ইমরুল কায়েস ঢাকা পোস্টকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন অনুষ্ঠানে কেন তারা শিক্ষার্থীদের দিয়ে এমন নাচ-গান করালেন- তা জানতে আগামীকাল বিদ্যালয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। নোটিশের জবাব আশানুরূপ না হলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাবনা জেলা শিক্ষা অফিসার এসএম মোসলেম উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে জানান, সেদিন সকালে বঙ্গবন্ধুর নামে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রথমে ৫ থেকে ৭ পাউন্ডের একটি কেক কেটেছেন। এরপর আলোচনা সভা ও লটারি ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষকরা যেমন শিক্ষার্থীদের নিয়ে নাচ করিয়েছেন, তেমনি সেখানে ভালো কাজও হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে মাসিক লটারিতে একজন শিক্ষক একটি ল্যাপটপও পুরস্কার পেয়েছেন। দিবসের তাৎপর্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অনুষ্ঠানও করেছে তারা।
তিনি বলেন, স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন বাবলুর ছোট ভাই স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আশরাফ আলী মহলদার বাবু এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটা করিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানে নিয়মবহির্ভূত কোনো নাচ-গান করানো হলে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
রাকিব হাসনাত/আরএআর