রাজশাহীতে ব্যবসায়ীর মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ
ছুরিকাঘাতে নিহত রাজশাহীর নিউ মার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী রিয়াজুল ইসলামের (২৩) মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) দুপুরের পর নিহতের মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেন রিয়াজুলের স্বজনরা। এ সময় তাদের সঙ্গে এলাকাবাসীও যোগ দেন।
জানা গেছে, ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরের দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে স্বজনদের নিকট মরদেহ হস্তান্তর করে পুলিশ। এরপরই মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফেরেন স্বজনরা।
বিজ্ঞাপন
পরে বেলা আড়াইটার দিকে নগরীর নিউ মার্কেট এলাকা থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। ষষ্ঠিতলা এলাকাবাসীর ব্যানারে এই বিক্ষোভ হয়। এক পর্যায়ে মরদেহ নিয়ে তারা নগরভবনের সামনে গ্রেটার রোড অবরোধ করে। বিক্ষোভ থেকে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি ওঠে।
নগরীর নিউ মার্কেট এলাকায় বিক্ষোভ-প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালে সেখানে উপস্থিত হন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। সেখানে বক্তব্য রাখেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ডাবলু সরকার বলেন, আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে অপরাধীরা নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। আসলে তাদের কোনো আদর্শ নেই। তারা আওয়ামী লীগ কিংবা অঙ্গসংগঠনের কেউ নন। আমি বিশ্বাস করি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবে।
এদিকে, এ ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে সোমবার দিবাগত রাতে বোয়ালিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটির বাদী নিহত রিয়াজুলের বাবা মধু শেখ।
মামলার এজাহারে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এরা হলেন- নগরীর ষষ্ঠীতলা এলাকার সাঈদ শেখের ছেলে রানা শেখ (৩০) ও রনি শেখ (২৬), রতনের ছেলে নাঈম (২৬), গৌরহাঙ্গা এলাকার আনুর ছেলে রিমন (২৪) ও দড়িখড়বনা এলাকার হাসুর ছেলে নাঈম (৩৫)। অজ্ঞতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৭ জনকে।
ঘটনার পর নগরীর ষষ্ঠীতলা এলাকা থেকে এজাহারনামীয় আসামি নাঈমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে মামলার অন্য আসামিদের এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজাহারুল ইসলাম জানান, এই মামলায় একজন আসামি গ্রেপ্তার রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তাকে আদালতে তোলা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা পলাতক। তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এনিয়ে পুলিশ আইনত ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানান ওসি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই নগরীর নিউ মার্কেটের পূর্ব দিকের প্রবেশ পথ সংলগ্ন ফুটপাতে জুতা-স্যাণ্ডেলের ব্যবসা করে আসছিলেন নগরীর ষষ্ঠিতলা এলাকার বাসিন্দা রিয়াজুল ইসলাম ও তার ভাই রিংকু।
সোমবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় একই এলাকার বাসিন্দা রনি ও নাঈম রিয়াজুলের দোকানে যান। তারা নিজেদের তাঁতি লীগ কর্মী পরিচয় দিয়ে রিয়াজুল ও তার ভাইকে দোকান সরিয়ে নিতে চাপ দেয়। এ নিয়ে ওই সময় দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দুই পক্ষকেই সরিয়ে দেয়।
এরপর রাত ৯টার দিকে রনি ও নাঈম আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে ফের সেখানে হাজির হয়। প্রথমেই তারা রিয়াজুলকে ছুরিকাঘাত করেন। ভাইকে রক্ষায় এগিয়ে যান রিংকু। তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়।
দুজনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান রিয়াজুল। আহত রিংকু হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরআই