মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় স্বাধীনতা দিবসে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শনিবার (২৬ মার্চ) সকালে উপজেলা চত্বরে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার সময় বালিয়াটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বালিয়াটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রুহুল আমিন তার সমর্থকদের নিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দেন। এরপর সদ্য বহিষ্কৃত একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর সোহেল আহম্মেদ চৌধুরী তার সমর্থকদের নিয়ে শহীদ মিনারে ফুল দেন। এ সময় একই ইউনিয়নের ব্যানারে দুবার ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ বাধে। দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে বালিয়াটি ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন ও ফুকুরহাটির যুবলীগ নেতা নাজমুল হোসেনসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। নাজমুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বালিয়াটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রুহুল আমিন জানান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ফুল দেই। এরপর আওয়ামী লীগের ব্যানারে বহিষ্কৃত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মীর সোহেল আহম্মেদ চৌধুরী শহীদ মিনারে ফুল দেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগতো একটা। একই ব্যানারে দুইবার ফুল দিতে গেলে আমি আপত্তি করি। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। যা খুবই দুঃখজনক ও নিন্দনীয়।

বালিয়াটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর সোহেল আহম্মেদ চৌধুরী জানান, আমি ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে ফুল দেই। পরে দলীয় ব্যানারে ফুল দিয়েছি। আমি বালিয়াটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে জয়লাভ করি। বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় দল থেকে আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করে। পরে বহিষ্কার প্রত্যাহার করা হয়। এ কারণে দলীয় ব্যানারে ফুল দিয়েছি। এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রুহুল আমিন আপত্তি করলে সংঘর্ষ বেধে যায়।

সাটুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আফাজ উদ্দিন বলেন, শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাটুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ ফটো বলেন, স্বাধীনতা দিবসে যারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে সংঘর্ষে জড়িয়েছে, তারা বিএনপি-জামায়াতের দোসর। এদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাটুরিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম বলেন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোহেল হোসেন/আরএআর