‘বরগুনাবাসী আমাকে যে সম্মান ও ভালোবাসা দিয়েছে, তার ঋণ আমি কখনো শোধ করতে পারব না। বরগুনাবাসীর কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ। স্বাধীনতা পদক আমার নয়, এই পদক পুরো বরগুনাবাসীর।’

শনিবার (২৬ মাচ) দুপুরে বরগুনা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তৎকালীন বরগুনা মহকুমার সাব ডিভিশনাল অফিসার (এসডিও) ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। 

তিনি আরও বলেন, আমি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলাম। তবুও আমার ডাকে সংঘবদ্ধ হয়েছিল মুক্তিকামী বরগুনার অপামর জনতা। আমার বাসভবন ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অফিস। ৭১ পরবর্তী সময়ে মেজর জিয়াউর রহমান বরগুনা সফর করেন, তিনি তখন আমার কাছে অস্ত্রের তালিকা চায়। কিন্তু আমি তাকে সাফ জানিয়ে দেই যে বরগুনায় কোনো অবৈধ অস্ত্র নেই।

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির, পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর মল্লিক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিয়া শারমিন প্রমুখ। 

ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বরগুনা জেলা সংগ্রাম পরিষদের মুখ্য সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন সাবেক এসডিও সিরাজ উদ্দিন আহমেদ। সম্প্রতি তিনি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হয়েছেন। এতে আমারা বরগুনাবাসী গর্বিত।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দুঃসংবাদ পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করে বলেন- ‘দিস ইস দ্য ইন্ড অব মাই লাইফ’। তারপর নিজের রিভলবারসহ এসডিপিওকে সঙ্গে নিয়ে তৎকালীন সমগ্র মহকুমায় সামরিক আইন জারি না করার নির্দেশ দেন।

সিরাজ উদ্দিন আহমেদ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং জনসেবার মধ্য দিয়ে বরগুনাবাসীর হৃদয়ে চিরভাস্বর হয়ে আছেন। তারই স্বীকৃতি হিসেবে জেলা সদরের প্রধান সড়কের নামকরণ করা হয়েছে সিরাজ উদ্দিন সড়ক এবং পৌর টাউন হলের নামকরণ করা হয়েছে সিরাজ উদ্দিন মিলনায়তন।

আরএআর