ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হাট গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আয়রন ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট খাওয়ার পর রেবা খাতুন (১২) নামে এক ছাত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। 

সোমবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার পর একই ক্লাসের আরও দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। 

মৃত রেবা খাতুন সদর উপজেলার উত্তর সমশপুর গ্রামের সাগর হোসেনের মেয়ে এবং হাট গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। এ ঘটনায় ফারজানা ও আসমা নামে আরও দুই শিক্ষার্থী সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইউসুফ আলী জানান, অন্যান্য দিনের মতো সকাল ১০টার দিকে স্কুলে আসে রেবা। সোমবার কৈশরকালীন পুষ্টি নিশ্চিত করতে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সরবরাহ করা আয়রন ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ করে রেবা খাতুনসহ তিনটি মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রেবাকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মৃত রেবার বাবা সাগর হোসেন বলেন, আমার মেয়ে সকালে বাড়ি থেকে ডিম আর মিষ্টিকুমড়ার তরকারি দিয়ে ভাত খেয়ে স্কুলে গেছে। আমার মেয়ের কোনো রোগ নেই। কেন আমার মেয়ে মারা গেল তা তদন্ত করার দাবি করছি।

হাটগোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান বিকাশ কুমার বিশ্বাস জানান, আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার পর তিনটা মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে একটি মেয়ে মারা গেছে। এই মৃত্যুর সঠিক কারণ যেন স্বাস্থ্য বিভাগ দ্রুত বের করে।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আশরাফুজ্জামান জানান, মেয়েটিকে আমরা মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তবে আয়রন ট্যাবলেট খেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে নাকি অন্য কোনো কারণ ছিল তা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ময়নাতদন্তের পরই জানা যাবে।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রাণী দেবনাথ বলেন, আয়রন ট্যাবলেট খেয়ে মৃত্যুর কোনো নজির নেই। এমনকি ওষুধ যদি মেয়াদোত্তীর্ণও হয়, তবুও সর্বোচ্চ পাতলা পায়খানা হতে পারে। তারপরও মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করার জন্য সদর হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ আনোয়ারুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

আব্দুল্লাহ আল মামুন/আরএআর