এবার চুরি করা মোটরসাইকেল নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় পাত্রী দেখতে গিয়ে পাত্রীপক্ষের হাতে ধরা পড়েন পুলিশের এসআই পরিচয় দেওয়া সেই সোহেল রানা হিমেল। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) রাতে পাত্রীপক্ষ সদর থানায় জানালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জেলা শহরের শেখপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

পরে তার স্বীকারোক্তিতে শহরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয় পুলিশের পোশাক ও নগদ টাকা। এ ছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে ঝিনাইদহ থেকে পুলিশের পোশাক পরিহিত অবস্থায় ট্রায়াল দিতে কৌশলে চুরি করা মোটরসাইকেল।

এর আগে পুলিশ পরিচয়ে ওই পাত্রীরই এক আত্মীয়ের কাছ থেকে জামিনের কথা বলে নগদ টাকা হাতিয়ে নেন সোহেল রানা। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এসব অপরাধ স্বীকার করেছে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পরিচয়দানকারী প্রতারক সোহেল রানা ওরফে হিমেল। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা করা হয়েছে।

সোহেল রানা হিমেল (২৬) কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর থানার আমবাড়িয়া গ্রামের মণ্ডলপাড়ার আজিবার রহমানের ছেলে।

বুধবার (৩০ মার্চ) সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার শেখপাড়ার জহুরুল ইসলাম মানিকের মেয়েকে পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে নিজের বিয়ের পাত্রী হিসেবে দেখতে যান সোহেল রানা। এ সময় তার কথায় সন্দেহ হয় কনের পরিবারের। পরে কনের বাড়ির ভাড়াটে আলমডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল গাফফার তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি যশোরের মনিরামপুর থানায় কর্মরত এসআই সুমন নামে পরিচয় দেন।

মনিরামপুর থানায় যোগাযোগ করলে জানায় যে সুমন নামে কোনো এসআই কর্মরত নেই। পরে খবর দেওয়া হলে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ তাকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি স্বীকার করেন। এ সময় তার কাছে থাকা চুরি করা পালসার মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। তার স্বীকারোক্তিতে শহরের হোটেল ভিআইপির বরাদ্দ নেওয়া একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয় পুলিশের পোশাক ও পাত্রীর এক আত্মীয়র নারী নির্যাতন মামলার জামিন করানোর নামে নেওয়া সাড়ে আট হাজার টাকা।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই সোহেলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ খবর পেয়ে ঝিনাইদহ থেকে মোটরসাইকেলের মালিক তারেক হোসেন চুয়াডাঙ্গা থানায় হাজির হন। তারেক বলেন, গত ১৫ মার্চ পুলিশের পোশাক পরা অবস্থায় ট্রায়াল দেওয়ার কথা বলে মোটরসাইকেল নিয়ে সটকে পড়েন সোহেল রানা।

গত বছরের ১৯ এপ্রিল পুলিশের এসআই পরিচয়ে আদালতের নথি জাল করে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের জামিন দেওয়ার নামে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সোহেলকে আটক করে সদর থানা পুলিশ।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোহেল রানার বিরুদ্ধে একটি প্রতারণা ও চুরির মামলা করা হয়েছে। আজ তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। মূলত পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা করাই তার পেশা।

আফজালুল হক/এনএ