রেজাউল করিম ও রুবেল হোসাইন

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় বাবার সই-স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া দলিল তৈরির মাধ্যমে জমি দখল ও মা-বাবাকে মারধরের অভিযোগে ছেলে ও নাতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) বিকেলে সাঁথিয়ার কাশিনাথপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আটকরা হলেন- সাঁথিয়ার কাশিনাথপুরের কলাগাছি গ্রামের মো. আব্বাস আলী ব্যাপারীর ছেলে ও বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কেরানি রেজাউল করিম (৪২) এবং তার আপন বড় ভাইয়ের ছেলে রুবেল হোসাইন (২৬)।

মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে এক বিঘা ফসলি জমি স্থানীয় একজনের নিকট বর্গা দেন আব্বাস। গত ২৬ মার্চ দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে বর্গাচাষী জমি থেকে পেঁয়াজ তুলতে গেলে অভিযুক্ত ছেলে বাধা প্রদান করেন। এ সময় জমির সব পেঁয়াজ ছিনিয়ে নেন তিনি। এতে বাধা দিলে ছেলে, নাতি ও ছেলের বউ বেধরক মারপিট করে বাবা-মাকে।

এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করে।


 
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, অন্যকে ভুয়া মালিক সাজিয়ে সাঁথিয়ার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল করা হলেও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ঢাকা ফরেনসিক ল্যাবরেটরির এক প্রতিবেদনে জালিয়াতি ধরা পড়ে।

সেই প্রতিবেদনটি পাবনার সাঁথিয়ার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে পাঠানো হলে সেখানে আব্বাস আলীর প্রকৃত ছাপের সঙ্গে দলিলে মিল না পাওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে।

ভুক্তভোগী আব্বাস আলী ব্যাপারী বলেন, ছেলে আমার স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া দলিল তৈরি করে ২৭ বছর ধরে ১ বিঘা জমি দখল করেছে। দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে কোর্টে মামলা পরিচালনা করেছি। অবশেষে ঢাকা থেকে ফরেনসিক রিপোর্টও আমার পক্ষে আনা হয়। তারপরও ছেলে জমি জোরপুর্বক দখল করে থাকতে চায়।

নিজের আপন বাবা বেঁচে থাকতে অন্যকে বাবা সাঁজিয়ে জাল দলিল তৈরি করে জমি দখল করেছে। এমন ছেলে দেশ ও জাতির লজ্জা। শুনেছি ছেলেকে পুলিশ আটক করেছে। ছেলে ও নাতির বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করেন তিনি। এছাড়া এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের আটকের জন্য থানা পুলিশকে অনুরোধ জানান তিনি।

সাঁথিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মো. সিদ্দিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মা-বাবাকে মারধরের ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এসপি মহিবুল ইসলাম খান স্যারের নির্দেশনায় অভিযুক্ত ছেলে ও নাতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বাবা-মাকে কষ্ট দেওয়ার শাস্তি তারা পেয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আব্বাস আলী বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেটি মামলায় নথিভূক্ত করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের সন্ধা ৭টার দিকে আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

রাকিব হাসনাত/আরআই