খুলনায় উজ্জল হত্যায় শিল্পপতিসহ ৫ জনের যাবজ্জীবন
খুলনার বহুল আলোচিত মডার্ন সি ফুডের কর্মকর্তা উজ্জল কুমার সাহাকে হত্যার দায়ে প্রতিষ্ঠানের মালিকের ছেলে শিল্পপতি মেহেদী হাসান স্টারলিংসহ পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শহীদুল ইসলাম এ রায় দেন।
বিজ্ঞাপন
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শিল্পপতি মেহেদী হাসান স্টারলিং, মো. আরিফুল হক সজল, নাহিদ রেজা রানা ওরফে রানা ওরফে লেজার রানা, মো. ডালিম শিকদার ওরফে আমির শিকদার ডালিম ও সজল মোল্লা।
এ মামলার অন্য চার আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারায় তাদের খালাস দিয়েছেন আদালত।
বিজ্ঞাপন
আদালত সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ৭ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মেয়েকে নিয়ে সামছুর রহমান রোডে জোহরা খাতুন স্কুলে আসেন উজ্জল কুমার সাহা। এরপর পাশের দোকানে গিয়ে ধুমপান করতে থাকেন তিনি। এর কিছুক্ষণের মধ্যে ফোন দেন মেহেদী হাসান স্টারলিংয়ের খালাতো ভাই আরিফুল হক সজল। অবস্থান নিশ্চিত করে অন্যান্য আসামিদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান সজল। আসামিদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষাও করেন উজ্জলের সঙ্গে। সজল স্থান ত্যাগ করার সঙ্গ সঙ্গে অন্যান্য আসামিরা ভিকটিমের ওপর ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প ও ইট নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ শুরু করে। তাদের আঘাতে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আসামিরা উজ্জলকে ফেলে পালিয়ে যান।
পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে খুলনা জেনারেল হাসপাতাল ও পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই সুমন কুমার সাহা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে খুলনা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন খুলনা থানার এসআই সোহেল রানা।
আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠালে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। কিন্তু চার্জশিট থেকে মামলার মূল পরিকল্পনাকারীর নাম বাদ দেওয়ায় বাদী আদালতে নারাজি পিটিশন দায়ের করেন। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহাজাহানের নিকট দেওয়া হয়। তিনিও আগের তদন্ত কর্মকর্তার পথ অনুসরণ করায় মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের নিকট পাঠানো হয়। পরে পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার্স) মো. আমিনুল ইসলাম ৯ জন আমামির নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মোহাম্মদ মিলন/আরএআর