হাতির পিঠে চড়ে কনের বাড়িতে যাচ্ছেন বর

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে হাতির পিঠে চড়ে কনের বাড়িতে গিয়ে বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার ভাঙামোড় ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই এলাকায় বাল্যবিয়ের খবরে  পুলিশ আসার খবরে তাড়াহুড়ো করে বিয়ে সেরে বিয়ে বাড়ি থেকে সটকে পড়েন বর ও কনেপক্ষ। 

বর সম্রাট নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশি ইউনিয়নের বদ্ধু খানের ছেলে। আর কনে ওই গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে আদুরী আক্তার (১৭)। সে দশম শ্রেণির ছাত্রী

ভাঙামোড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. লুৎফর রহমান বাবু বাল্যবিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাবু ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার বিকেলে বর সম্রাট হাতির পিঠে চড়ে নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের ঠকটারি এলাকা থেকে ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙামোড় ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ী গ্রামে বিয়ে করতে যাচ্ছিলেন। এ সময় হাতির পিঠে বরকে দেখে উৎসুক জনতা ভিড় করতে থাকেন। পরে স্থানীয়রা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে হাতির পিঠে চরে বর সম্রাট মূলত বাল্যবিয়ে করতে যাচ্ছেন। বিষয়টি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাবুর নজরে আসলে তিনি গ্রাম পুলিশ সফিকুলকে পাঠিয়ে বাল্যবিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হন।

পরে চেয়ারম্যান বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানালে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্তু পুলিশ আসার খবরে বর ও কনেপক্ষ দ্রুত বিয়ে বাড়ি ত্যাগ করেন। তবে তার আগেই বিয়ে সম্পন্ন হয় বলে জানান স্থানীয়রা।

কনের দুলাভাই হাফিজুল ইসলাম জানান, ফুলবাড়ীর বড়ভিটা কলেজ মাঠে আয়োজিত স্থানীয় একটি সার্কাসের হাতি ১৫ হাজার টাকায় ভাড়া করে তার পিঠে চড়ে বিয়ে করতে আসেন সম্রাট। কনে দশম শ্রেণির ছাত্রী। মেয়ের বয়স কম হওয়ায় পুলিশ আসার খবরে সবাই বাড়ি থেকে সটকে পড়েন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে কাউকে না পেয়ে ফিরে যায়। 

স্থানীয়রা বলেন, জীবনে এই প্রথম দেখলাম আমার এলাকায় হাতির পিঠে চড়ে বর বিয়ে করতে এসেছে। মেয়ের বয়স কম হওয়ায় বর কনেকে হাতির পিঠে চড়ে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারলো না। পুলিশের ভয়ে রাতের অন্ধকারে পালাতে হয়েছে। 

এ বিষয়ে ফুলবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) রাজীব কুমার রায় বলেন, বাল্যবিয়ে হচ্ছে এমন খবরে আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। কিন্তু পুলিশ গিয়ে বিয়ে বাড়িতে কাউকে পায়নি। তবে জানতে পেরেছি পুলিশ যাওয়ার অগেই বিয়ে সম্পন্ন করে উভয়পক্ষ পালিয়ে গেছে। 

ফুলবাড়ী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাল্যবিয়ে হয়েছে কি-না আমি জানি না। তবে অভিযোগ পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে কাউকে পাইনি। 

জুয়েল রানা/আরএআর