নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত জান্নাতুল ফেরদাউস তাসপিয়ার (৪) বাবা মাওলানা আবু জাহেরের (৩৮) ডান চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে তিনি নিজেই ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

মাওলানা আবু জাহের বলেন, দোকান থেকে একটি জুস ও চিপস নিয়ে বের হচ্ছিলাম। এ সময় মহিন, রিমন, আকবর, নাঈমের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একদল সন্ত্রাসী বাজারে আসে। পরে তারা আমাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে পাশে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডারে লেগে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দ্রুত তাসফিয়াকে নিয়ে দোকান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা আমাদের লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করলে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাসফিয়া। পরে দোকানি মামুনের সহযোগিতায় আমরা বাড়ির দিকে যাওয়ার পথে পেছন থেকে আরও দুই রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। এতে তাসফিয়া ও আমি গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। গুলিতে মাথাসহ পুরো শরীর ঝাঁঝরা হয়ে যায় তাসফিয়ার।

আবু জাহের আরও বলেন, সন্ত্রাসীদের গুলিতে আমি আমার ডান চোখ হারিয়েছি। সেহরির সময় আমার মেয়ের লাশ নিয়ে ঢাকা থেকে এসেছি। আজ (বৃহস্পতিবার) মাগরিবের পর জানাজা হবে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। 

তাসফিয়ার মা জেসমিন আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার সোনামণি তাসপিয়া লাশ হয়ে ফিরেছে। আমার বুকটা খালি হয়ে গেছে। মেয়ে আমারে ঘুম পাড়িয়ে যে গেল, আর আসবে না।

এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহিদুল হক রনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিহতের চাচা হুমায়ুন কবির ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আমরা ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। গুরুত্ব দিয়ে এ মামলাটির তদন্ত চলছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নে সন্ত্রাসীদের গুলিতে জান্নাতুল ফেরদাউস তাসপিয়া (৪) নামে এক শিশু নিহত হয়। এসময় গুলিবিদ্ধ হন শিশুটির বাবা সৌদি প্রবাসী মাওলানা আবু জাহেরও।

হাসিব আল আমিন/এমএএস