কুমিল্লায় সংবাদকর্মী মহিউদ্দিন হত্যারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে কুমিল্লা ফটোসাংবাদিক ফোরাম ও বুড়িচং প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

বক্তারা বলেন, সাংবাদিক মহিউদ্দিনকে হত্যা করেছে মাদক কারবারিরা। এসব খুনির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে সাংবাদিক হত্যা বন্ধ হবে না। ভবিষ্যতে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড যেন না ঘটে, সে ব্যাপারে প্রশাসনকে কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় নির্মমভাবে মাদক কারবারিদের গুলিতে নিহত হন মহিউদ্দিন।

তারা আরও বলেন, ঘটনার দুদিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। মূল হোতা ও আসামি মাদক কারবারি রাজু গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক নীতিশ সাহা, কুমিল্লা ফটোসাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ওমর ফারুকী তাপস, কুমিল্লা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক, কুমিল্লা ফটোসাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান, বুড়িচং প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী খোরশেদ আলম, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক বাবুসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মরত সাংবাদিকরা।

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, ইতিমধ্যে এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজন এজাহারনামীয় ফরহাদ মৃধা (৩৮) ও মো. পলাশ মিয়া (৩৪)। আর বাকি দুজন নুরু মিয়া ও সুজন। তারা হত্যাকাণ্ডে সহযোগী ছিলেন। মূল হোতা রাজুকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

উল্লেখ্য, এর আগে মাদক কারবারির গুলিতে মহিউদ্দিন সরকার নিহত হন। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের হায়দ্রাবাদের শঙ্কুচাইল ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় কোনো রকমে প্রাণে বেঁচে ফেরেন মহিউদ্দিনের বন্ধু পলাশ।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পলাশ জানিয়েছিলেন, রাত সাড়ে ৯টায় রাজু বাহিনী অস্ত্র নিয়ে এসে সাংবাদিক কই বলে চিৎকার করে। এ সময় মহিউদ্দিনকে তুলে নিয়ে গুলি করে তারা। তখন আমি পালিয়ে যাই। পরবর্তীতে কয়েকটি গুলির শব্দ শুনতে পাই। পরে শুনি মহিউদ্দিনকে মেরে ফেলেছে তারা।

বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাতে নিহত মহিউদ্দিন সরকার নাঈমের মা নাজমা আক্তার বাদী হয়ে মাদক ব্যবসায়ী রাজুকে প্রধান আসামি করে তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করা হয়।

রাজু কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের সাদেক মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত মহিউদ্দিন একসময় সাংবাদিকতায় সক্রিয় ছিলেন। আনন্দ টিভির উপজেলা প্রতিনিধি ও স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকায় কাজ করতেন।  তিনি বিভিন্ন সময় ভারতীয় সীমান্তে মাদক চোরাচালান গোপন তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিতেন। এ নিয়ে বিরোধ জেরে রাজু তাকে পরিকল্পিত হত্যা করে।

অমিত মজুমদার/এনএ