নানা বাধা কাটিয়ে ও হাইকোর্টের নির্দেশনার পর আবারও শুরু হয়েছে পাবনার ঐতিহ্যবাহী ইছামতি নদী পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান। মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সকাল থেকে পৌর এলাকার শালগাড়িয়া মহল্লা ও গাংকুলা এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।

দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, পাবনা শহরের শালগাড়িয়া এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চলছে। কয়েকটি এক্সকাভেটর (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে অবৈধ স্থাপনাগুলো। ভবনগুলো একে একে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে। পাশে দাঁড়িয়ে সেখানকার বাসিন্দারা অপলকে সে দৃশ্য দেখছেন। উচ্ছেদ অভিযান দেখতে উৎসুক জনতাও সেখানে ভিড় করেন।

উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন পাবনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রফিকুল হাসান, পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহীন রেজা ও পাবনা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী। এ সময় পাবনা জেলা প্রশাসন, পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পৌরসভা কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে তৃতীয় দফায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। কিন্তু কয়েকদিন পর মামলার কারণে সেটি স্থগিত করা হয়। বসতিদের একাধিক মামলার কারণে উচ্ছেদের ওপর জারি করা স্থিতাবস্থা গত ২৪ এপ্রিল তুলে নেন হাইকোর্ট। ফলে ইছামতি নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সব ধরনের বাধা কেটে যায়। এর একদিন পরই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করল প্রশাসন।

পাবনাবাসীর বহুল প্রত্যাশিত নদীর পাড় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর। লাইব্রেরি বাজার ব্রিজ থেকে দক্ষিণমুখী এক কিলোমিটার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। বর্তমানে নদীর ওই অংশে খননকাজ চলছে। পরে ওই বছরের ৩১ মার্চ লাইব্রেরি বাজার ব্রিজ থেকে উত্তরমুখে দ্বিতীয় দফায় উচ্ছেদ শুরুর কয়েকদিন পরই তা থেমে যায়। হাইকোর্টে নদীর পাড়ের বসতিদের মামলাসংক্রান্ত আইনি জটিলতায় বেশ কিছুদিন উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ ছিল।

প্রায় দুই বছর বিরতির পর উচ্চ আদালতে কিছু মামলা নিষ্পত্তি হওয়ায় চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে আবারও শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান। এ দিন শহরের গোবিন্দা ও কৃষ্ণপুর এলাকার বেশকিছু স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এর কয়েকদিনের মাথায় আবারও বন্ধ হয়ে যায় আলোচিত উচ্ছেদ অভিযান।

রাকিব হাসনাত/এসএসএইচ