লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নে নুর হোসেন নামে এক ফল বিক্রেতার কাছ থেকে প্রায় ১৫০ কেজি (৭ বস্তা) ভিজিএফ’র চাল জব্দ করা হয়েছে। তিনি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইউছুফ আলি মিয়ার সহযোগী বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সকালে চরমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা থেকে রিকশা ভর্তি চালগুলো জব্দ করা হয়। তবে অভিযুক্ত নুর হোসেন তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। তিনি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হারিছ সর্দার বাড়ির মনির হোসেনের ছেলে ও স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী।

স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘটনার সময় নুর হোসেন একটি বাড়ি থেকে রিকশাযোগে চালগুলো নিয়ে বের হচ্ছিলেন। সন্দেহ হলে স্থানীয়রা চরমার্টিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেনকে জানায়। তিনি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও ট্যাগ অফিসার মোর্শেদ আলম এবং ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ আলি মিয়াকে জানান। খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে চালগুলো জব্দ করে ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে যান। এর আগেই অভিযুক্ত নুর হোসেন পালিয়ে যান।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নুর হোসেন চেয়ারম্যান ইউসুফের সহযোগী। ঘটনার আগমুহূর্তে তিনি চালগুলো এনে ওই বাড়ির গোয়াল ঘরে রাখেন। তাকে আইনের আওতায় আনলে ঘটনার রহস্য উদঘাটন হবে।

আওয়ামী লীগ নেতা বেলায়েত হোসেন জানান, নুর হোসেন আগেও কয়েকবার এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। স্থানীয়রা আমাকে জানিয়েছে। কিন্তু আগে তাকে হাতেনাতে ধরা সম্ভব হয়নি। এবার তাকে হাতেনাতে ধরেছিলাম। ধরা পড়ে নুর হোসেন সবার সামনে আমাকে জানিয়েছে, চেয়ারম্যানের হয়ে তিনি (নুর হোসেন) চাল সংগ্রহ করেছেন। তবে তিনি আটক করলেও কৌশলে নুর হোসেন সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

অভিযুক্ত নুর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, টোকেন জমা দিয়ে তিনি চাল সংগ্রহ করে বস্তায় রেখেছেন। এসব চাল পরে লোকজনের মধ্যে বিতরণ করার কথা ছিল।

চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী মিয়া বলেন, নুর হোসেন ফল বিক্রেতা, আমার লোক নয়। সে আমার সহযোগী হতে যাবে কেন। আমরা একজনকে এক প্যাকেটে ১০ কেজি চাল দিয়েছি। নুর হোসেন একসঙ্গে এত চাল পেল কোথায়, তা আমি জানি না।

এ বিষয়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোর্শেদ আলম বলেন, প্রায় ১৫০ কেজি চাল জব্দ করা হয়েছে। অভিযুক্ত নুর হোসেন চেয়ারম্যানের লোক বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি আমি ইউএনওকে জানিয়েছি। তিনি ব্যবস্থা নেবেন। জব্দ চালগুলো পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ট্যাগ অফিসার আমাকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চেয়ারম্যান জড়িত কি না তা তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। তদন্ত শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ইকতারুল ইসলাম বলেন, আমি এখনও নির্দেশনার চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এসএসএইচ