বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের মরদেহ তার গাজীপুর মহানগরের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।

বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মান্নানের ছেলে মঞ্জুরুল করিম রনি’র বরাত দিয়ে গাজীপুর মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ফারহাজ বিন ফয়েজ প্রবাল জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বাদ জুমা গাজীপুর জেলা রাজবাড়ি মাঠ এবং সালনা নাসির উদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার তৃতীয় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।

অধ্যাপক এমএ মান্নান গাজীপুর জেলা সদরের দক্ষিণ সালনায় ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সালনা প্রাইমারি স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন জয়দেবপুর রানী বিলাসমণি স্কুলে। সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি পড়েন ময়মনসিংহ মুসলিম হাই স্কুলে এরপর নবম ও দশম শ্রেণি ময়মনসিংহ জিলা স্কুলে পড়ে এসএসসি পাস করেন।

কলেজ জীবনের এইচএসসি ও ডিগ্রি পাস করেন ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ থেকে। এভাবেই ময়মনসিংহের শিক্ষাজীবন শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত রসায়নে এমএসসিতে ভর্তি হন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে টঙ্গী কলেজে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু। তখন থেকেই শিক্ষকতার পাশাপাশি রাজনীতি ও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সক্রিয় রেখেছেন। টঙ্গী কলেজ ছেড়ে পরে তিনি গাজীপুর কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে যোগদান করেন।

রাজনীতি
দীর্ঘ বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে তিনি দলের সদস্য থেকে শুরু করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব এবং বর্তমানে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মান্নানের রাজনৈতিক উত্থান শুরু ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন থেকে। অবশ্য এর আগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলে দলীয়ভাবে সালনা গ্রাম সরকার প্রধানের দায়িত্ব পান তিনি। পরে জাতীয় গ্রাম সরকারের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিবেরও দায়িত্বে ছিলেন। 

অধ্যাপক মান্নান প্রথম’ ৮৪ সালে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কাউলতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরপর চার বার তিনি ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচন করে বিজয়ী হন।

তিনি ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-২ (গাজীপুর সদর ও টঙ্গী) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দেশের সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়ে এম এ মান্নান বিএনপি সরকারের ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। পরে প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। 

শিহাব খান/এমএএস