অ্যাডভোকেট এম জুবেদ আলী

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও নেত্রকোণা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনের চার বারের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট এম জুবেদ আলী (৯২) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। 

বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে ময়মনসিংহ শহরের নেক্সাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়  শনিবার (৩০ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। 

এম জুবেদ আলীর ভাগিনা কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জন্মভূমি নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের কাউরাট গ্রামের বাড়িতে এম জুবেদ আলীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। রাত সাড়ে ৯টায় কেন্দুয়া জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা হবে। পরে ময়মনসিংহ শহরে তৃতীয় জানাজা শেষে সেখানেই মরহুমের দাফন সম্পন্ন করা হবে। মৃত্যুকালে এম জুবেদ আলী দুই ছেলে, তিন মেয়ে ও নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। 

এদিকে প্রবীণ এই আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যুতে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও নেত্রকোণা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলসহ নেত্রকোণা জেলা ও কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে।

১৯৩০ সালের ২৫ ডিসেম্বর নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার কাউরাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এম জুবেদ আলী। তার বাবা আরফান আলী মুন্সি এবং মা ময়মনজান বিবি। এম জুবেদ আলী ১৯৪৬ সালে কেন্দুয়া জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজ থেকে ১৯৪৯ সালে এইচএসসি এবং ১৯৫২ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। এরপর ১৯৬২ সালে তিনি ময়মনসিংহ বারে আইন পেশায় যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। 

এদিকে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে এম জুবেদ আলী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এমএনএ নির্বাচিত হন। পরে ১৯৭৩, ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধকালে এম জুবেদ আলী অ্যাডমিনিস্ট্রিয়াল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর সংসদে গৃহীত বাংলাদেশের সংবিধান প্রণনয় ও সংবিধানে স্বাক্ষর করেন এম জুবেদ আলী। স্বাধীনতার পর তিনি বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যান এবং ময়মনসিংহ জেলার গভর্নর নিযুক্ত হন। 

জিয়াউর রহমান/আরএআর