শিমুলিয়া-বাংলাবাজার-মাঝিরকান্দি নৌরুটে ঝোড়ো আবহাওয়ার ফলে পদ্মা নদী উত্তাল থাকায় বন্ধ রাখা হয়েছে লঞ্চ চলাচল। তবে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেই এই রুটে ফেরি চলাচল করছে। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুর্ঘটনা এড়াতে এ সিদ্ধান্তের নেয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

বিআইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, বাতাস ও বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ায় পদ্মায় ঢেউ রয়েছে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে লঞ্চ বন্ধ রয়েছে। শুধু ফেরি চলছে।

তবে শঙ্কা প্রকাশ করছেন যাত্রীরা জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঝোড়ো বাতাস বৃদ্ধির পাশাপাশি বৃষ্টি শুরু হয়। এর মধ্য দিয়েই ফেরি চলাচল করছে। এ নৌরুটে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেতের পরেও ঝড়-বৃষ্টির মধ্য দিয়ে ফেরি চলাচল করায় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের আগস্টে পদ্মা সেতুর পিলারে বেশ কয়েকবার ফেরির ধাক্কা লাগায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে ওই রুটে দুর্ভোগ চরম আকারে দেখা দিয়েছিল।

সরকারি সংস্থার বন্দর কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান, নৌপথে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত রয়েছে। এ অবস্থায় কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কায় সব ধরনের লঞ্চ চলাচল সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ দেওয়া না পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। যাত্রীদের ফেরির মাধ্যমে পারাপারের জন্য ৭টার দিকে মাইকিং করা হয়েছে।

ফেরিঘাট সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফেরিতে পারাপারের জন্য মাইকিংয়ের ঘোষণা শুনে ঘরমুখো যাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাত ১১টার দিকেও ঘাটে শতশত যাত্রীদের পারাপারের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়েই যাত্রীরা বাধ্য হয়ে ফেরিতে উঠছেন। হঠাৎ এমন বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে বিপাকে কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা থেকে আসা রহমান খান বলেন, পদ্মায় অনেক ঢেউ। প্রচণ্ড বাতাস ও বৃষ্টির মধ্যে ফেরিতে পার হয়েছি। মাঝ নদীতে এসে ভয় পেয়েছিলাম। এখনো শিমুলিয়া ঘাটে অনেক যাত্রী ও যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায়।

বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় চায়ের দোকানদার আরমান বলেন, গত বছর ফেরির সঙ্গে পদ্মা সেতুর পিলারে ধাক্কা লেগেছিল। এত ঝড়ের ভেতর ফেরি চলাচল করলে আবারও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

বরিশালগামী যাত্রী সেকান্দার বলেন, আমার রওনা দিতে দেরি হয়েছে। ঘাটে এসে দেখি লঞ্চ বন্ধ। পরে ফেরিতে পার হয়েছি। লঞ্চে হলে তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে পারতাম।

বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, সন্ধ্যায় কালবৈশাখী ঝড়ের শঙ্কায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এতে ফেরিতে যাত্রী পারাপারের চাপ বেড়েছে। ফেরি ক্যামেলিয়া, কুঞ্জলতা (টানা ফেরি) সহ আরও দুটি ফেরি চলাচল করছে। এখনো ঘাট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।

নাজমুল মোড়ল/ওএফ