সাতক্ষীরার বাজারে এল গোবিন্দভোগ আম। সরকারি নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার (৫ মে) থেকে জেলাব্যাপী গোবিন্দভোগ গাছ থেকে আম ভাঙা শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। প্রথম দিন বাজারে এ কাঁচা আম বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ৬৫ টাকা দরে।

তবে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গাছে ফলন কম হওয়ায় এ বছর সকল আম ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়বেন। সাতক্ষীরা সদরের কুকরালী এলাকার আম ব্যবসায়ী মোকছেদ আলী মোড়ল। ১৪ লাখ টাকায় ১৫টি আম বাগান কেনা রয়েছে এই ব্যবসায়ীর। লোকসানের আশঙ্কায় চিন্তার ভাজ তার চোখেমুখে।

আম ব্যবসায়ী মোকছেদ আলী মোড়ল জানান, এ বছর আম গাছে ফলন খুব কম। হিমসাগর আম গাছে শতকরা ৩০ ভাগ আম এসেছে। গোবিন্দভোগ গাছে এসেছে ৭০ ভাগ আম। এভাবে সকল আম গাছেই ফলন খু্ব কম। আমার ১৪ লাখ টাকার আম গাছ কেনা রয়েছে। ধারণা মতে এ বছর ৮ লাখ টাকা লোকসান যাবে। 

তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার থেকে গোবিন্দভোগ আম ভাঙা শুরু করেছি। প্রথমদিনে ৮ মন আম সাতক্ষীরার বড় বাজারে আমের আড়তে বিক্রি করেছি। প্রতিমন কাঁচা আম বিক্রি হয়েছে ২৬০০ টাকা, প্রতি কেজি পড়েছে ৬৫ টাকায়। প্রথমদিনে বাজারে আম কম ছিল। তবে সামনের দিনে আরও বাড়বে। ধারণা করছি, দামও বাড়বে।

এদিকে, গত ২৭ মার্চ সরকারি কর্মকর্তা ও আম ব্যবসায়ীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় জেলায় আম ভাঙার সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয় জেলা প্রশাসন। সেখানে ৫ মে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বায়, ক্ষীরশাপাতি, গোলাপখাস ও বৈশাখীসহ অন্যান্য স্থানীয় জাতের আম, ১৬ মে হিমসাগর, ২৪ মে ল্যাংড়া ও পহেলা জুন আম্রপালি আম ভেঙে বাজারে তোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, গত বছর ৪ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছিল। চলতি বছর ৪ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। আবাদ বাড়লেও এ বছর ৫০ ভাগ গাছেই আসেনি আমের মুকুল। জেলায় ৫ হাজার ২৯৯টি আমবাগান ও ১৩ হাজার আমচাষি রয়েছে।

সাতক্ষীরার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ির উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম জানান, চলতি বছর জেলায় আমের ফলন খুব কম হয়েছে। ৫০ ভাগ গাছে মুকুল আসেনি। আমগাছে যখন মুকুল আসবে, ঠিক তার আগ মুহূর্তে বৃষ্টি হওয়ায় মুকুল আসেনি। গাছে কচি সবুজ পাতা চলে আসে। বৃষ্টির কারণে আমচাষিরা খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ বছর।

তিনি বলেন, নিরাপদ আম বাজারকারণ বিষয়ক সভার মাধ্যমে গাছ থেকে পরিপক্ক আম ভাঙার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের আগে যদি কোনো ব্যবসায়ী বা চাষি অপরিপক্ক আম গাছ থেকে পেড়ে কার্বাইড দিয়ে বাজারজাত করার চেষ্টা করে তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আকরামুল ইসলাম/এমএএস