সন্তান প্রসবের সময় স্থানীয় এক পশু চিকিৎসকের অপচিকিৎসায় মারা যাওয়া নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার সেই প্রসূতি ও তার নবজাতকের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে রোববার (৮ মে) দুপুরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে মরদেহ দুটি উত্তোলন করা হয়।

এ সময় নেত্রকোণার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বারহাট্টা সার্কেল) সাইদুর রহমান, বারহাট্টা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফুল হক, স্থানীয় সিংধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসিম উদ্দিন তালুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

সন্ধ্যায় বারহাট্টা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফুল হক ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় মারা যাওয়া প্রসূতির স্বামী মহসিন মিয়া পশু চিকিৎসক আবুল কাশেমকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। মামলার পর আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি তদন্তের স্বার্থে মরদেহ দুটি উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

পুলিশ ও প্রসূতির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মারা যাওয়া প্রসূতি শরিফা আক্তার (১৯) বারহাট্টা উপজেলার চন্দ্রপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের হাইছ উদ্দিনের মেয়ে। গত বছর সুনামগঞ্জের তাহেরপুর উপজেলার লামাগাঁও গ্রামের আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে মো. মহসিন মিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সন্তান প্রসবের জন্য কিছুদিন আগে তিনি তার বাবার বাড়িতে আসেন। গত বুধবার (৪ মে) দুপুরের দিকে সন্তান প্রসবকালে তার মৃত্যু হয়। একই সময় তার নবজাতকও মারা যায়। পরদিন বৃহস্পতিবার তাদের মরদেহ চন্দ্রপুর গ্রামে দাফন করা হয়। পরে অভিযোগ উঠে যে, পশু চিকিৎসক আবুল কাশেমের ভুল চিকিৎসায় ওই প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। 

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে- আসামি আবুল কাশেম একজন পশু চিকিৎসক। পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও তিনি প্রসূতি শরিফার সন্তান প্রসবের সময় এন্টিবায়টিকসহ বিভিন্ন প্রকার ইনজেকশন দেন ও স্যালাইন পুশ করেন। তার অপচিকিৎসায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।

জিয়াউর রহমান/আরএআর