চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্ৰামের নজরুল ইসলাম (৬০) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গত মঙ্গলবার (১০ মে) মধ্যরাতে পরকীয়া প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামী নজরুলকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন স্ত্রী লালবানু। 

হত্যাকাণ্ডের ১৮ ঘণ্টার মধ্যেই হত্যার রহস্য উদঘাটন করল চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। শুক্রবার (১৩ মে) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করে জেলা পুলিশ।

নিহত নজরুল ইসলাম পেশায় কসাই ছিলেন। এ ঘটনায় নজরুল ইসলামের তৃতীয় স্ত্রী লালবানু ছাড়াও তার প্রেমিক শাকিরকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এছাড়াও পরকীয়া প্রেমে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। 

এর আগে গত বুধবার (১১ মে) সকালে গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের রহনপুর-আড্ডা সড়কের নজরপুর নামক স্থানে রাস্তার পাশ থেকে নজরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বাড়ি থেকে প্রায় ৫শ গজ দুরে একই এলাকায় রাস্তার পাশে তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রকিব নির্দেশনায় তদন্ত শুরু করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। মরদেহের পাশে থাকা একটি প্লাস্টিকের দড়ির সূত্র ধরে নিহতের তৃতীয় স্ত্রী লালবানুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়।  গোমস্তাপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে লালবানুকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বিস্তারিত তথ্য জানা যায়। 

পুলিশ জানায়, লালবানুর বাড়িতে চায়ের স্টল থাকার সুবাদে বাড়ির পাশে থাকা ইটভাটার ম্যানেজার শাকিরের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত মার্চ মাসে শাকির এনায়েতপুর বাজার থেকে লালবানুকে নিজ নামে রেজিষ্ট্রেশনকৃত একটি নতুন সিম কার্ড ও মোবাইল কিনে দেন। এভাবেই গোপনে চলতে থাকে লালবানু ও শাকিরের পরকীয়া প্রেম। কিছুদিন আগে নজরুল ইসলাম বিষয়টি জানতে পারলে তার স্ত্রীকে মারধর করেন এবং প্রেমিক শাকিরকে গালিগালাজ করেন। 

এ ঘটনায় শাকির ক্ষোভে নজরুলকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। নজরুলকে মারতে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন রাতে স্ত্রী লালবানু ও প্রেমিক শাকির রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে বালিশের ওপরে কাঁথা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। 

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, হত্যার সময় নজরুলের দুই পা চেপে ধরে লালবানু এবং গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করেন প্রেমিক শাকির। ঘটনার মোড় অন্যদিকে ধাবিত করতে লালবানু ও শাকির নজরুলের মরদেহ কাঁধে করে বাড়ি থেকে সামান্য দূরে রাস্তার পাশে রেখে আসে। লালবানুর স্বীকারোক্তিতে প্রেমিক শাকিরকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।

জাহাঙ্গীর আলম/আরএআর