চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফ আহম্মেদ ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসিল্যান্ড মিথিলা দাসের বিরুদ্ধে লুটপাটের মামলা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) দুপুরে নাচোল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার বাদী নাচোল উপজেলার কসবা গ্রামের কামাল উদ্দিনের ছেলো মো. আব্দুর রশিদ। 

মামলার কপি, বাদী ও আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, নাচোল উপজেলার কসবা উজিরপুর হাটের অবৈধ উচ্ছেদের সময় আব্দুর রশিদের দুটি ঘর ভেঙে ফেলাকে কেন্দ্র করে এ মামলা হয়েছে। 

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, কসবা গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলী লতিবের ছেলে মো. দুরুল, মো. নুরুল ও একই এলাকার মৃত হেলালের ছেলে মো. জেন্টু। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ আহম্মেদকে। দুই নম্বর আসামি সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিথিলা দাস। 

মামলার বাদী আব্দুর রশিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ১০ মে কসবা উজিরপুর হাটে সরকারি জমিতে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে নাচোল উপজেলা প্রশাসন। এসময় ৩০-৪০টি দোকান ঘর উচ্ছেদ করা হয়। হাটের পাশেই দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে থাকা আরএস ১৬৬ নম্বর দাগে আমাদের বাড়িতেও অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। 

অথচ জায়গাটি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এমনকি আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তিতে বাড়ি থাকলেও ইউএনও ও এসিল্যান্ডের নির্দেশে দুটি পাকা ঘর ভেঙে ফেলা হয়। অনেক কাকুতি-মিনতি করেও কোনো সুযোগ দেয়নি তারা। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের বাড়ি ভাঙার সময় ইউএনও ও এসিল্যান্ডের উপস্থিতিতে ২০-২২ জন লোক আমােদর বাড়িতে প্রবেশ করে। এসময় ঘরে ঢুকে মামলার আসামি দুরুল, নুরুল ও জেন্টু বাক্সে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। এমনকি ঘরের খাট, শোফাসেট, কাঁসার থালি লুট করে নিয়ে যায় তারা। 

আব্দুর রশিদ বলেন, লুটপাট করা লোকজন ইউএনও ও এসিল্যান্ডের বাহিনী। এ কাজে তাদের পুরোপুরি সমর্থন ছিল। দুটি ঘরে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা ছাড়াও আরও অন্তত ৬৩ হাজার টাকার মালামাল লুটপাট করেছে। ইউএনও ও এসিল্যান্ডের নির্দেশনায় ও উপস্থিতিতে এমন কাজ করা হয়েছে। তাই বিচার পেতে তাদের বিরুদ্ধে আদালতের কাছে শরণাপন্ন হয়েছি। 

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. আব্দুর রহমান (২) ঢাকা পোস্টকে জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে আদালত মামলা গ্রহণ করেছেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. হুমায়ন কবীর আগামী রোববার আদেশের দিন নির্ধারণ করেছেন। 

নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফ আহম্মেদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মামলার বিষয়টি শোনার পর তিনি বলেন, এখন একটু ব্যস্ত আছি। এ বিষয়ে এক ঘণ্টা পরে কথা বলব। 

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিথিলা দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামলা দায়েরের বিষয়টি আমার জানা নেই। জানার পর এ বিষয়ে মন্তব্য করব। তবে উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি সরকারি হাট। যা ইজারা দেয়া হয়েছে। সেখানে অবৈধ দখলদারদের উঠিয়ে দিতেই নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

মো. জাহাঙ্গীর আলম/এমএএস