হামলায় আহতদের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে

বরিশালে বাস মালিক সমিতির নেতা কাওছার হোসেন শিপনের কথায় সড়ক অবরোধ তুলে না নেয়ায় রাতে মেসে মেসে গিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের শ্রমিকরা মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ১১ জন শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় ভর্তি হয়েছেন। 

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সুব্রত বিশ্বাস জানিয়েছেন, রাতেই শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এছাড়াও যেসব অভিযোগ তারা এনেছেন সেই বিষয়টি খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

মাঝরাতে এই ঘটনার প্রতিবাদে আবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। 

তবে রূপাতলী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন দাবি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঝামেলা বিআরটিসি বাসের সাথে। আমাদের সাথে কোনো ঝামেলা নেই। তারা বলছেন- আমার নেতৃত্বে হামলা হয়েছে- এটা মোটেই তারা ঠিক বলছেন না।

এই পরিবহন নেতা বলেন, ছাত্ররা অনুমানের ওপর নির্ভর করে আমাকে দোষারোপ করছেন। কারণ গতকাল (মঙ্গলবার) ওরা যখন বিআরটিসি কাউন্টার ভাঙচুর করে সড়ক অবরোধ করলো কয়েক ঘণ্টা। তখন আমি তাদের বলেছিলাম জনগণের ভোগান্তি না করে সড়ক অবরোধ তুলে নাও। শিক্ষার্থীরা সেই কথা মানছিল না। এ নিয়ে ওদের সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়। ওরা ধারণা করছে, সে কারণে আমি হয়তো হামলা চালাতে পারি। ছাত্রদের এই ধারণা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
 
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান তমাল জানান, রাত দেড়টার দিকে কাওছার হোসেন শিপনের শ্রমিকরা রূপাতলী হাউজিংয়ের ই-ব্লকে ঢুকে মেসে মেসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করেন। এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের মারধর করে সড়কের পাশের ডোবায় ফেলে দেন।

ওই রাতে মাহমুদল হাসান তমাল ফেসবুক লাইভে এসে মারধরের শিকার শিক্ষার্থীদের বাঁচনোর জন্য অনুরোধ জানান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই লাইভটি ছড়িয়ে পড়লে রাত আড়াইটার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কাঠ পুড়িয়ে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক হোসেন জানান, মঙ্গলবার আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করেছে বাস শ্রমিকরা। এক বোনকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এর প্রতিবাদ যখন করেছি তখন পরিবহন শ্রমিকরা মেসে মেসে গিয়ে আমাদের মারধর করেছে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতয়ালী) মো. রাসেল বলেন, শিক্ষার্থীদের হামলার ঘটনায় থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যিালয়ের উপাচার্য আন্দোলনরতদের সাথে বৈঠকে বসেছেন বলে জেনেছি। 

এই কর্মকর্তা বলেন, পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে পুলিশ।

হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- সমাজবিজ্ঞান বিভাগের আলীম সালেহী, মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের নুরুল্লাহ সিদ্দিকী, গণিত বিভাগের ফজলুল হক রাজীব, রসায়ন বিভাগের এস এম সোহানুর রহমান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আহসানুজ্জামান, বোটানি ও ক্রপ সাইন্সের আলী হাসান, বাংলা বিভাগের মো. রাজন হোসেন এবং মার্কেটিং বিভাগের মাহবুবুর রহমান, মাহাদী হাসান ইমন, মিরাজ হাওলাদার ও সজীব শেখ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষাভ করছেন। এতে মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। 

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর