চুয়াডাঙ্গা জীবননগর উপজেলায় টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে মুক্তার হোসেন (৪৫) নামে এক কৃষক বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সকাল ১০টার দিকে তিনি নিজ বাড়িতে বিষপান করেন। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

মুক্তার হোসেন জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মীরপাড়ার মৃত আকবর আলীর ছেলে। 

পরিবারের সদস্যদের দাবি, মুক্তার আলী দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। টাকার অভাবে নিজের চিকিৎসা করাতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন। 

মুক্তার আলীর মেয়ে নাজমিন খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বাবা কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে কোনো রকমে সংসার চালাতেন। বেশ কিছুদিন যাবত মাজা, পেট, মাথাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ভুগছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন অসুস্থতার কারণে সংসার চালাতেও বেগ পেতে হচ্ছিল। এছাড়াও টাকার অভাবে নিজের চিকিৎসাও করাতে পারতেন না । এ জন্য আজ সকালে অভিমান করে সবার অগোচরে বিষপান করেন। ঘণ্টাখানেক পর অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষপানের বিষয়টি জানতে পারি আমরা। ততক্ষণে দেরী হয়ে গেছে। পরে বাবাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন তিনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মুক্তার আলী খুবই দরিদ্র ছিলেন। কৃষি কাজ করে কোনো রকমে সংসার চালাতেন। দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ভুগছিলেন তিনি। ঠিকঠাক চিকিৎসাও করাতে পারেননি। তাই বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে জেনেছি। 

সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. খালিদ হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকালে মুক্তার আলী বিষপান করেছেন জানিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসে পরিবারের সদস্যরা। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে মৃত ঘোষণা করি। হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। 

জীবননগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক বলেন, দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ ছিলেন মুক্তার আলী। তাই হতাশায় বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। অভিযোগ না থাকায় অবেদনের প্রেক্ষিতে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

আফজালুল হক/আরএআর