বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি

যশোরের বাঘারপাড়ায় সাদিয়া খাতুন (২০) নামে অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার (২৭ মে) সকালে উপজেলার খাজুরা তেলীধান্যপুড়া গ্রামে বাবার বাড়ি থেকে তার গলায় ওড়না পেঁচানো ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

সাদিয়া তেলীধান্যপুড়া গ্রামের শহর আলীর মেয়ে ও একই উপজেলার ধলগ্রাম ইউনিয়নের আন্দোলবাড়িয়া গ্রামের সেলিম রেজার স্ত্রী। 

সাদিয়ার স্বজনদের অভিযোগ, পেটের সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করায় সাদিয়া আত্মহত্যা করেছে।

এদিকে সাদিয়ার ঘরে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। এতে লেখা রয়েছে- ‘আমি ফোন দিছিলাম তোমার সাথে থাকবো বলে। তা তুমি বুঝলে না। আমি তোমাকে বলতে চাইছিলাম যে তোমার সন্তান আমার গর্ভে। তুমি বুঝলে না। তুমি ভালো থেকো। হয়তো বেঁচে থাকলে আমাকে মেনে নিতে না। কি করে তোমাকে ছাড়া অন্য কারো কাছে থাকবো। ভালো থেকো সেলিম।’

সাদিয়ার মা তাহেরা বেগম বলেন, বছর খানেক আগে আন্দোলবাড়িয়া গ্রামের মঞ্জুর মোল্লার ছেলে সেলিমের সঙ্গে সাদিয়ার বিয়ে দিয়েছিলাম। পারিবারিকভাবে সাদিয়ার সঙ্গে বিয়ে হলেও এর আগে নিজের মামাতো বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সেলিমের। কিন্তু বিয়ের পরও ওই মেয়ের সঙ্গে তার পরকীয়া সম্পর্ক চলছিল। যেটা মেনে নিতে পারেনি সাদিয়া। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রায়ই সাদিয়াকে মারধর করতো সেলিম। পারিবারিক কলহের জের ধরে ১৫ দিন আগে সাদিয়াকে আমাদের বাড়িতে রেখে যায় সেলিম। 

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ মে) বিকেলে সাদিয়া অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খুশির খবরটি ফোনে জানালে পিতৃ পরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানায় সেলিম। যে কারণে কষ্ট ও ক্ষোভে শুক্রবার ভোররাতে শোয়ার ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে সাদিয়া। 

অভিযোগের বিষয়ে সাদিয়ার স্বামী সেলিম হোসেন মুঠোফোনে বলেন, আমার মামাতো বোনের ২০০৮ সালে বিয়ে হয়ে গেছে। তার সঙ্গে অন্য কোনো সম্পর্ক ছিল না। আর আমার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়নি। তাই পিতৃত্ব পরিচয় দিতে আমার অস্বীকৃতি জানানোর কোনো প্রশ্নই আসে না।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাঘারপাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ উদ্দীন জানান, খবর পেয়ে সকালে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবার মামলা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

জাহিদ হাসান/আরএআর