বৈষম্যকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা ও হরিজন-দলিত জনগোষ্ঠীর স্বার্থ পরিপন্হী বৈষম্য বিরোধ বিল-২০২২ আইনের প্রস্তাবিত খসড়া পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে হরিজন অধিকার আদায় সংগঠন। মিছিল ও মানববন্ধন সমাবেশের পাশাপাশি আইনমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বেলা ৩টার দিকে রংপুর নগরীর কাচারি বাজার চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করেছে হরিজন অধিকার আদায় সংগঠন।  

এতে বক্তারা বলেন, দেশে বসবাসরত প্রায় ৬৫ লাখ হরিজন-দলিত জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে জনজীবনকে দুর্গন্ধ থেকে দূরে রাখতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত এই জনগোষ্ঠী। করোনা মহামারিতেও সম্মুখযোদ্ধার মতো কাজ করে গেছে তার। কিন্তু স্বাধীন দেশে মূলধারার মানুষের চেয়ে হরিজন-দলিতরা সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, মানবাধিকার ও নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও জাত-পাত, ধর্ম-পেশা, ভাষা ও সংস্কৃতির কারণে বৈষম্যের শিকার হতে হয়।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বৈষম্য আছে। এই বৈষম্য দূরীকরণের জন্য অবশ্যই আইন ও সঠিক পরিকল্পনা থাকা দরকার। কিন্তু বৈষম্য বিরোধ বিল-২০২২ আইনটি বৈষম্য বিলোপে ভূমিকা রাখার বদলে ভোগান্তি বাড়াবে। বৈষম্য বিলোপের জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো প্রস্তাবিত আইনের খসড়া সাংঘর্ষিক। এ আইন নাগরিকের সরাসরি আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে,  যা সংবিধান বিরোধী।

হরিজনদের দাবি, প্রস্তাবিত খসড়া আইনে বৈষম্যকে কোনো অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। এ ছাড়া অনেক ধারা, উপ-ধারা আছে যা হরিজন-দলিত জনগোষ্ঠীর স্বার্থ পরিপন্থী। এ কারণে আইনের খসড়ার পরিবর্তনের জোরল দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি সুরেশ বাসফোর, সাধারণ সম্পাদক সাজু বাসফোর, সদস্য রাজা বাসফোর, পাঠাগার সম্পাদক জয় বাসফোর, সাংস্কৃতিক সম্পাদক শাকিল বাসফোর প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সহ-সভাপতি রাজু বাসফোর।

পরে সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আইনমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি পেশ করে হরিজন অধিকার আদায় সংগঠন। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই