মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ সহজ ছিল না। এটি একটি কষ্টসাধ্য বিষয় ছিল। দুঃসাধ্য ছিল। অবাস্তব ছিল। শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাস্তবকে বাস্তবে পরিণত করেছেন।

শনিবার (১১ জুন) দুপুরে মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিম পৌরসভার কমলাঘাট বন্দরে সামরীন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করেছেন। আমাদের নিজস্ব অর্থায়নের মাধ্যমে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকে দেখিয়েছেন বাংলাদেশও পারে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু কী সেটি তারাই জানে, যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা পদ্মা পারি দেওয়ার জন্য শিমুলিয়া ঘাটে অপেক্ষা করতেন। সন্তানহীন মায়েরা, যারা সন্তানের লাশ নিয়ে ঘাটে অপেক্ষা করেছেন। ওই প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা, যারা ফেরি পার হতে না পেরে প্লেনের ফ্লাইট মিস করেছেন। আর জানে ওই গরিব কৃষক, খুদে ব্যবসায়ীরা। যারা সময়মতো ফেরি পার হতে না পারায় তাদের উৎপাদিত কাঁচা তরকারি নষ্ট হয়েছে। সব ভুক্তভোগীরাই জানেন এই পদ্মা সেতুর মর্ম।  একমাত্র জানেন না খালেদা জিয়া, বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা। 

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিলেন তিনি ক্ষমতায় আসলে একটা নয়, দুইটা পদ্মা সেতু নির্মাণ করবেন। যারা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় একটি কালভার্ট নির্মাণ করতে পারেননি, তারা করবেন সেতু! প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে পদ্মা সেতুর স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তিনি সেটি বাস্তবায়ন করেছেন। খালেদা জিয়া বলেছিলেন,পদ্মা সেতু জোড়াতালির। কেউ উঠবেন না। 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্পর্কে ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা বলেন, মির্জা ফখরুল অসত্য কথার গোডাউন। তিনি বলেছেন- ‘খালেদা জিয়া পদ্মা সেতুর ভিত্তি উদ্বোধন করেছেন।’ মির্জা ফখরুলের মাথা গরম হয়ে গেছে। তাকে পাবনায় নেওয়া উচিত।  

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অনেক উন্নত সমৃদ্ধ দেশেও কিন্তু প্রবৃদ্ধির হার নেগেটিভে চলে যাচ্ছে। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধির হার ৭ পারসেন্টের ওপরে। আপনারা নিজেরাও দেখেছেন এদেশে কিন্তু একটি লোকও না খেয়ে মারা যায়নি। করোনার প্রভাব কিন্তু এখন বাংলাদেশে নেই। তারপরও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। ব্যবসায়ী ভাইয়েরা একটু সচেতন হন। সবার অবস্থাতো আর আপনাদের মতো না। আশেপাশে তাকিয়ে দেখুন, তাদের আর্থিক অবস্থাটা বিবেচনা করে লাভের মাত্রাটা একটু কমাইয়া করেন। লোকসান দিতে বলছি না। লাভটা একটু কমাইয়া করেন। তাহলে কিন্তু জনসাধরনের ওপরে  দ্রব্যমূল্যের প্রভাবটা পড়বে না। টাকা দিলে খাবার আছে, না দিলে নাই। এটাতো হতে পারে না। ডিমান্ড সাপ্লাই পারস্পরিকভাবে জড়িত। আমাদের কিন্তু যথেষ্ট ডিমান্ডের সঙ্গে যথেষ্ট সাপ্লাই আছে। কিন্তু কতিপয় অসাধু ব্যবাসায়ী ঘাটতির সৃষ্টি করেন।

সামরীন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক ও মিরকাদিম পৌরসভার সাবেক মেয়র শহিদুল ইসলাম শাহীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক ফরিদা পারভীন, সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আনিসুজ্জামান আনিস, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিনহাজ-উল-ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার উদ্দিন ভূঁইয়া, রামপাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মো. বাচ্চু শেখ প্রমুখ।

সামরীন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের উদ্বোধন করেন ইভিন্স গ্রুপ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার উল আলম চৌধুরী।

 ব ম শামীম/আরএআর