বিকেলে মেয়ের বিয়ে, সকালে প্রতিবেশীর কোদালের কোপে প্রাণ গেল বাবার

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিবেশীর কোদালের কোপে বাবলু রহমান (৪০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গঙ্গাদাসপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

বাবলু ওই গ্রামের মাঝেরপাড়ার মৃত রমজান আলী বিশ্বাসের ছেলে। এ ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত জমির উদ্দিনকে আটক করে থানা হেফাজতে নিয়েছে। আটক জমির উদ্দিন (৪৫) একই এলাকার মৃত ইব্রাহিম মণ্ডলের ছেলে।

পুলিশ জানায়, বিভিন্ন সময় অভিযুক্ত জমির উদ্দিন তার মা ফাতেমা খাতুনকে (৯০) মারধর করতেন। প্রতিবারই প্রতিবেশী বাবলু রহমান মারধরের প্রতিবাদ করে আসছিল। এতে জমিরের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এলাকার ফজলুর চায়ের দোকানের আশপাশে ওৎ পেয়ে থাকে জমির উদ্দিন। সকাল ১০টার দিকে বাবলু দোকানের সামনে পৌঁছালে কোদাল দিয়ে মাথায় কোপ দিয়ে পালিয়ে যায় জমির।

পরে স্থানীয়রা বাবলুকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত জমিরকে আটক করে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে মরদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কুদ্দুস ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযুক্ত জমির উদ্দিন মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল।বৃহস্পতিবার সকালে বাবলু বাড়ি থেকে সাইকেলযোগে বের হওয়ার পরই কোদাল দিয়ে কোপ দেয় জমির। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও বলেন, আজ বিকেলে পাত্র পক্ষ বাবলুর মেয়েকে দেখতে এসে বিয়ে সম্পন্ন করার কথা ছিল। সকাল থেকেই বাবলু মেয়ের বিয়ের জন্য দাওয়াত ও কেনাকাটায় ব্যস্ত ছিল। এমন দিনই বাবলুকে হারাল তার পরিবার।

জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক আবাসিক মেডিকেল অফিসার মাহমুদ বিন হেদায়েতের নম্বরে কল করা হলে তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক বলেন, অভিযুক্ত জমির উদ্দিন তার বয়স্ক মাকে মারধর করলে বাবলু প্রতিবাদ করতেন। এই ক্ষোভ থেকে জমিরের কোদালের কোপে বাবলু নিহত হয়েছে। অভিযুক্ত জমিরকে আটক করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত মানসিক রোগী কিনা চিকিৎসক বলবেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আফজালুল হক/এসপি