কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের মীর মশাররফ হোসেন ছাত্রাবাস ও লালন শাহ ছাত্রাবাসের ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনার প্রেক্ষাপটে উভয় ছাত্রাবাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

একইসঙ্গে মঙ্গলবার (২১ জুন) সন্ধ্যার মীর মশাররফ, লালন শাহ ছাত্রাবাস ও তাপসী রাবেয়া ছাত্রীনিবাসের শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

এরই মধ্যে শিক্ষার্থীরা হল ছেড়েছেন। অনির্দিষ্টকালের জন্য হল তিনটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মুনির হোসেন।

জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে মীর মশাররফ হোসেন ছাত্রাবাসের ছাত্রদের সঙ্গে লালন শাহ ছাত্রাবাসের ছাত্রদের কথা-কাটাকাটি হয়। এর কিছুক্ষণ পরে মীর মশাররফ হোসেন ছাত্রাবাসের ছাত্ররা বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে মীর মশাররফ হোসেন ছাত্রাবাসের ছাত্রদের ওপর হামলা করে। দুই গ্রুপের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা সংঘর্ষ হয়। পরে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় দু'পক্ষের প্রায় ১০ জন আহত হয়েছেন। 

কলেজের অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের দুই ছাত্রাবাসের ছাত্রদের মধ্যে হঠাৎ করে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। উত্তেজনাকর পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে একাডেমিক কাম প্রশাসনিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত তোতাবেক প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ও ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা রক্ষার্থে আবাসিক হলগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। 

লালন শাহ ছাত্রাবাসের ছাত্র রিয়েল বলেন, আমি পাওয়ার টেকনোলজি ডিপার্টমেন্টের শেষ বর্ষের ছাত্র। তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে মীর মশাররফ হোসেন ছাত্রাবাসের ছাত্ররা বহিরাগত আনাস, সূর্য, গোলাম রাব্বি, নিশান, আশিক সহ অর্ধশতাধিক লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের হলের অনেক ছাত্র আহত হয়েছে।

মীর মশাররফ হোসেন ছাত্রাবাসের ছাত্র ওয়াসিম আকরাম বলেন, আমি ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের শেষ বর্ষের ছাত্র। মারামারির ঘটনার পেছনে একটি ঘটনা আছে। তা হলো, আমাদের হলের একজন ছাত্রের বান্ধবীসহ প্রায় ৫ জনের গায়ে পানি দেয় লালন হলের কয়েকজন। তারা তাদের পানি দিতে নিষেধ করলে মারার চেষ্টা করে। পরে আমরা আনাস ভাইসহ কয়েকজন সিনিয়রদের সঙ্গে নিয়ে তাদের বোঝানোর জন্য লালন হলে যাই। বিষয়টি নিয়ে এসময় মারামারির ঘটনা ঘটে। আমাদের দুজন আহত হয়েছে।

কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকজন আহত হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। 

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মুনির হোসেন বলেন, সকল পর্যায়ের চলমান সব একাডেমিক কার্যক্রম যথারীতি অব্যাহত থাকবে। সকল পর্যায়ের ক্লাস ও পরীক্ষা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র আবাসিক হল তিনটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
 
রাজু আহমেদ/এমএএস