আলোর স্বল্পতায় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা, ক্ষুব্ধ জনতা
সারাদেশের মতো ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত করা হয় লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। সার্বিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ধোয়া-মোছার কাজ করেন দায়িত্বে থাকা কমিটি। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি আলো এক স্বল্পতায় ভুতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ফলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় জনতা।
সরজমিনে দেখা গেছে, শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একপাশেই বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে লাইট লাগানো হয়। অপরপাশে ব্যাটারির সোলারের লাইট। কিন্তু সোলারের লাইট রাত ১১টার আগেই চার্জ শেষ হয়ে আলো অনেকটাই কমে যায়। এতে করে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি আলো স্বল্পতায় এক ভূতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বিজ্ঞাপন
রাত ১২টা এক মিনিটে শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। কিন্তু আলো স্বল্পতা দেখে দায়িত্বে থাকা আয়োজকদের নিয়ে সমালোচনা হয়। এসময় আয়োজকরা বিষয়টি টের পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা নেন। ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি এসে লাইটের ব্যবস্থা করলে অন্ধকারের থেকে কিছুটা রেহাই মিলে। পরে মানুষ ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা জানাতে আসা জনতা এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন। পরে অন্ধকারে শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তারা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল হাসান, উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) জাহাঙ্গীর হোসেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও) ফেরদৌস আলম, কালীগঞ্জ থানার ওসি আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির উপজেলার নেতাকর্মীরা নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
নাম না বলা শর্তে এক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, প্রথম প্রহরে জাতি ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে ‘মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালিত হচ্ছে। তবে অনেকটা অন্ধকারেই। মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা সৈনিকদের প্রতি অবহেলা করেছে প্রশাসন বলে দাবী করেন তিনি।
কালীগঞ্জ করিম উদ্দিন পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বদলুল আলম জাদু বলেন, শহীদ মিনার চত্বরে পর্যাপ্ত আলো না থাকায় অনেককে চেনা যায়নি।
সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মহসিন টুলু বলেন, লাইট একটু কম ছিল, যার কারণে আমাদের দেখতে একটু সমস্যা হয়েছে। তবে এটা ঠিক হয়নি। আশা করছি প্রশাসন পরবর্তীতে আর এমন করবে না।
শহীদ মিনারের উপ-কমিটির আহবায়ক ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দা সিফাত জাহান বলেন, দুই দিকে দুটো লাইট দেওয়া ছিল, তাই আর কোনো লাইটের ব্যবস্থা করা হয়নি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবার আয়োজন না থাকায় বেশি লাইটের ব্যবস্থা করা হয়নি। তবে পরবর্তীতে লাইটিংয়ের ভালো করা হবে বলেও তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রবিউল হাসান বলেন, সন্ধ্যার পরে একবার দেখেছি, তখন আলো স্বল্পতার চোখে পড়েনি। কিন্তু রাত ১২টার আগে ঠিকই আলো স্বল্পতার বিষয়টি দেখেছি। বিষয়টি পরবর্তীতে খেয়াল রাখা হবে বলেও তিনি জানান।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/ওএফ