গত কয়েক দিনের গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের জনজীবন। গরমের প্রভাবে বেড়েছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীও। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঘন ঘন লোডশেডিং রোগীদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ২৫০ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি রয়েছে ২৯৬ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৪ জন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১২ শয্যার বিপরীতে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি আছে ২৪ জন রোগী। শিশু ওয়ার্ডে ২৮ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছে ৬৯ জন। অনেকে বেডে জায়গা না পেয়ে বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

শিশু ওয়ার্ডের কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স প্রিয়াংকা রানী বলেন, গরম বাড়ার কারণে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে তুলনামূলক রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। আমাদের বেডের তুলনায় রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ। নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। যার কারণে চিকিৎসা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি।

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে আবদুল্লাহ নামে এক শিশুর মা বলেন, আমার বাচ্চার ডায়রিয়া। গত চার দিন থেকে হাসপাতালে আছি। গরমে থাকা যাচ্ছে না। আবার বার বার বিদ্যুৎ চলে যায়। বাচ্চাকে নিয়ে খুব সমস্যায় আছি।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ও জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আল-আমিন মাসুদ বলেন, আবহাওয়াজনিত কারণে এখানে অনেক গরম পড়েছে। গরমের কারণে জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া বেড়ে গেছে। এ সময় শিশুদের বাবা-মাকে সর্তক থাকার জন্য অনুরোধ করছি। বিশেষ করে তারা যেন বাইরের কোনো খাবার বাচ্চাদের না খাওয়ান। গরমে বাচ্চাদের গা ঘেমে গেলে মুছে দিতে হবে। খাবার সব সময় ঢেকে রাখতে হবে। যদি কখনো কোনো সমস্যা হয়, তাহলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে।

কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুর-এ মোর্শেদ বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়া ও তীব্র গরমে রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করছি। জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা চলমান রয়েছে। এছাড়া জেলায় ৮৫টি মোবাইল মেডিকেল টিম কাজ করছে। সিরিয়াস রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা জেলা সদর হাসপাতালে রের্ফার করছি। আশা করছি পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

জুয়েল রানা/এসপি