জোরাজুরির এক পর্যায়ে ছেলে রাজিব হোসেনকে (১৫) ২০ হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোন কিনে দিয়েছিলেন পোশাককর্মী আফরোজা বেগম। সেই ফোনই কাল হলো রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকছাতারী গ্রামের কিশোর রাজিবের।

শুক্রবার (৮ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার কালিগ্রাম এলাকার পদ্মা নদী থেকে রাজিব হোসেনের অর্ধ গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রাজিব চকছাতারী গ্রামের দিনমজুর আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। বাঘা ইসলামি একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো ওই কিশোর। 

স্বজনরা জানান, বুধবার দুপুরের খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল রাজিব। এরপর আর ফেরেনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি পরিবার। এ নিয়ে ওই দিনই থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন বড় বোন চায়না খাতুন।

চায়না খাতুন জানান, কাজের সূত্রে তার বাবা ও মা ঢাকায় থাকেন। বিয়ের পর তিনিও স্বামীর সংসারে। তার ভাইও ঢাকায় থাকত। সম্প্রতি গ্রামে ফিরে আসে। তাকে দেখাশোনার জন্য নানি সুরাজান বেগম থাকতেন। কিছু দিন আগে রাজিবকে রেডমি-১০ অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন কিনে দেন মা। এই ফোন হাতিয়ে নিতেই তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন চায়না।

কিশোর রাজিবের নানি সুরজান বেগম জানান, নতুন ফোন কেনার পর মাঝেমধ্যেই বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যেত রাজিব। বুধবার দুপুরের খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় সে। এরপর আর ফিরে আসেনি। 

খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধারে যান বাঘা থানার উপ-পরিদর্শক তৈয়ব আলী। তিনি বলেন, ভাসমান অবস্থায় অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া গেছে রাজিবের। তার গলায় দড়ি ছিল। মুখের মধ্যেও দড়ি ঢোকানো ছিল।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ওই কিশোরকে শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহ পদ্মায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। 

এসআই তৈয়ব আলী আরও বলেন, ওই কিশোরীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি পাওয়া যায়নি। ওই ফোনের জন্য তাকে হত্যা করা হয়েছে কি না সেটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তাতে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরআই